দেশে ও বিশ্বে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা খুবই চাঞ্চল্যকর। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে স্বামীকে অন্য মহিলার সাথে আপত্তিকর সম্পর্ক স্থাপনের কারণে ভয়ানক ভাবে খুনের অভিযোগ উঠেছে এক বিখ্যাত মডেলের বিরুদ্ধে। একই সময়ে, যে মহিলার কারণে মডেলটি তার স্বামীকে হত্যা করেছিল, তার গায়ে একটি আঁচড়ও আসেনি।
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাসকারী এক মহিলা মডেল সুপরিচিত ম্যাগাজিন এবং ব্র্যান্ডের জন্য মডেলিং করতেন। ২৭ বছর বয়সী এই নারীর নাম লিলিয়া সাউদাকোভা (Lilia Saudakova) এবং তার স্বামীর নাম সের্গেই পপভ (Surjei Popov)। এই মহিলা বিখ্যাত ম্যাগাজিন ভোগ এর মডেল (Vogue Model) তিনি রাশিয়ান ভোগ ম্যাগাজিন এবং ইতালি এবং অন্যান্য দেশের নামিদামি ম্যাগাজিনের কভার পেজে ফিচার হয়েছেন।
আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে নিজের স্বামীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে এই মডেলের বিরুদ্ধে। বিষয়টি তদন্ত করে মডেল স্ত্রীকে আটক করা হয়। প্রথমে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে চলা জিজ্ঞাসাবাদে এই মামলায় চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে অভিযুক্ত স্ত্রী জানিয়েছেন, “ঘটনার কয়েকদিন আগে স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে অস্বীকার করেছিলাম, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একদিন অজ্ঞাতনামা মহিলাকে বাড়িতে ডেকে আনেন স্বামী। আমি স্বামীর এই পদক্ষেপে আপত্তি জানালে তিনি মহিলার সামনে ঝগড়া ও দুর্ব্যবহার শুরু করেন।”
মডেল স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছিলেন যে, আসলে স্বামী (Surjei Popov) তাকে অপমান করতে চেয়েছিলেন। একইসঙ্গে তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন যে, যদি তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না থাকে, তাহলে অচেনা মহিলাকে বাড়িতে এনে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করবে। অভিযুক্ত স্ত্রী বলেন, “ওই লোকটি (স্বামী) আমাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল, তাই আমি তার সঙ্গে অশান্তি করতে বাধ্য হয়েছিলাম।”
মডেল লিলিয়া সুদাকোভা রাশিয়া সহ ইউরোপের অনেক দেশে বিখ্যাত মডেল। তিনি নিজের জবানবন্দীতে আরো জানিয়েছেন “ঘটনার দিন আমি তাকে বাধা দিলে সে বাইরের অন্য মহিলার সামনে আমায় মারামারি ও মারধর শুরু করে। আমি বাধা দিলে সে আমার প্রাণহানির চেষ্টা করে। তাই বাঁধা দিতে আমি তাকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করি এবং তাকে ছুরিকাঘাত করি। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত স্ত্রীর ছুরির আঘাতে স্বামী গুরুতর জখম হয়ে যায় যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনার পর অভিযুক্ত মডেলকে আট মাস ধরে নিজ বাড়িতে গৃহবন্দি করে রেখেছে রাশিয়ার পুলিশ। পাশাপাশি আদালতে বিচার চলাকালীন তাকে বিচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। আইনপ্রণেতারা লিলিয়ার উপর খুব একটা আশ্বস্ত নন। তাদের বেশিরভাগই বিশ্বাস করেন যে তিনি যেভাবে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তাকে না হলেও ১৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে মডেলের মা তার মেয়েকে নির্দোষ উল্লেখ করে বলেন, আত্মরক্ষার্থে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
