আজারবাইজানের পার্শ্বে অবস্থিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসে পরিপূর্ণ কাস্পিয়ান সাগরের তলদেশ। বেশ অনেক দিন ধরেই কিছু তেল উত্তোলনকারী সংস্থা এই আজারবাইজান উপকূলের কাছের কাস্পিয়ান সাগরের কাছ থেকে তেল এবং গ্যাস উত্তোলন করে। কিন্তু গত রবিবার আচমকাই ঘটে এক দুর্ঘটনা। একটি তেল উত্তোলনকারী কেন্দ্রের খুব কাছে কাস্পিয়ান সাগরের মাঝে আচমকাই হয় এক তীব্র বিস্ফোরণ হয়। ভয়ঙ্কর শব্দে কেঁপে ওঠে চারিপাশ।
এরপরই যেন ভূগর্ভ ফুরে বেরিয়ে আসে গনগনে গরম তাল তাল কাদা। এই কাদার যা উষ্ণতা কোনো প্রাণী কাছে গেলে জীবিত থাকবে না। কাস্পিয়ান সাগরের বুকে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এই কাদার তালের উৎস কি? জানা যাচ্ছে ভীষণ গরম এই কাদার তাল বেরিয়ে আসছে Mud Volcano বা কর্দমাক্ত আগ্নেয়গিরি থেকে।
কিন্তু কাদার আগ্নেয়গিরি জিনিসটি আসলে কি?
এর সাথে বিশ্ববাসী খুব একটা পরিচিত নয়।তবে সম্প্রতি কাস্পিয়ান সাগর সংলগ্ন এলাকায় এই উষ্ণ কাদার স্রোত পৃথিবী কে পরিচয় করাচ্ছে Mud Volcano এর সাথে। এই কাদার আগ্নেয়গিরির কারণে আজারবাইজানের সমুদ্রের তলদেশে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের কেন্দ্রগুলি মাঝে মাঝে কেঁপে ওঠে, বিস্ফোরণও হয়।
কীভাবে গঠিত হয় এই কাদার আগ্নেয়গিরি? এই কাদার আগ্নেয়গিরি ঘিরে এখনও অবধি দুই ধরনের মত আছে। প্রথমত, মাটির নিচে নানা ধরনের দাহ্য গ্যাস অনেক পরিমাণে জমে গেলে তা তৈরি হয় এই মাড ভলকানো। আরেক মোট প্রাকৃতিক মাটির নিচের গ্যাসগুলি নানা ধরনের পাথরের সংস্পর্শে এলে বৃদ্ধি হয় তাপমাত্রা। তাতেই মাটির নিচের ভুগর্ভে বাড়তে থাকে উষ্ণতা এবং বিস্ফোরণের পর বেরিয়ে আসে কাদা। জানা যায় সারা পৃথিবীতে এই ধরনের আগ্নেয়গিরি রয়েছে প্রায় ৪০০টি। তবে কোন জায়গায় তাদের অবস্থান, তা এখনও অনুসন্ধানের অধীনে।
আজারবাইজান ওয়েদার ডিপার্টমেন্ট তরফে জানানো হয়েছে, সেখানকার ভূপৃষ্ঠে রয়েছে বেশ কয়েকটি মাড ভলক্যানো বা কাদার আগ্নেয়গিরি আছে। সেখানে কোনো কারণে অগ্নুৎপাত হলে লাভার সঙ্গে কাদাও বেরিয়ে আসতে শুরু করে। ভূপৃষ্ঠ ছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠেও এই ধরনের মাড ভলক্যানো (Mud Volcano) বা আগ্নেয়গিরি রয়েছে। কাস্পিয়ান সাগর অঞ্চলে এই ধরনের আগ্নেয়গিরির সংখ্যা বহু। তেমনই একটি কাদার আগ্নেয়গিরি থেকে সম্প্রতি অগ্নুৎপাতে হতেই ঘটেছে বিস্ফোরণ।
আজারবাইজানের সংবাদসংস্থা এপি থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলেছে আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় তেল সংস্থা সোকার-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, গ্যাস এবং তেলের কেন্দ্রের থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। তবে এই বিস্ফোরণে তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি সেই তৈল কেন্দ্রের। কোনও হতাহতেরও খবরও নেই।