বিহারের সমস্তিপুর থেকে প্রকাশ্যে এসেছে এমন একটি বিয়োগান্তক ঘটনা যা গোটা মানব সমাজ কে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। সন্তানের নিথর দেহ হাসপাতালে। কিন্তু তাকে দেখতে পারছে না বাবা-মা। তাদের ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে রাস্তায়। হাতে একটা গামছা। গামছা পেতেই কখনও এদিক ওদিকে অর্থ সাহায্য চাইছেন। কেন?
জানা গেছে এক গরীব অসহায় বাবা মায়ের কাছে তাদের ছেলের দেহ হস্তান্তর করার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী কর্মী। অসহায় বাবা-মা টাকা দিতে না পারলে দেহ দিতে অস্বীকৃতি জানান ময়নাতদন্ত কর্মী। এমতাবস্থায় যুবক ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে আর তার শেষকৃত্য করতে জায়গায় জায়গায় অনুদান সংগ্রহ শুরু করেন তিনি।
ঘটনাটি সমষ্টিপুর জেলার তাজপুর থানার অন্তর্গত শহর আহর গ্রামের। আহারের বাসিন্দা মহেশ ঠাকুরের ২৫ বছর বয়সী ছেলে কয়েকদিন আগে নিখোঁজ হয়েছিল। প্রথমে, পরিবার তাদের তরফ থেকে অনেক গবেষণা করেছিল, কিন্তু ছেলের খোঁজ পায়নি। এরপর তারা পুলিশের কাছে ছেলের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন।
মহেশ ঠাকুর ৭ই জুন খবর পান যে পুলিশ এক অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। তিনি সংশ্লিষ্ট থানায় পৌঁছালে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়। তিনি সদর হাসপাতালে পৌছালে প্রথমে ময়নাতদন্তকারী কর্মীরা মৃতদেহ দেখাতে অস্বীকার করলেও পরে অনেক অনুনয় বিনয়ের পর মৃতদেহ দেখান হয়।
মহেশ ঠাকুর মৃতদেহটিকে তাঁর ছেলে সঞ্জীব ঠাকুর বলে সনাক্ত করতে পেরেছেন। নিহতের বাবা তার কাছে ছেলের দেহ হস্তান্তর করতে বললে ময়নাতদন্তকারী কর্মী তার কাছে লাশ হস্তান্তরের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। অসহায় ও দরিদ্র মহেশ এত মোটা অঙ্কের টাকা দিতে অপারগ সেটা তাদের জানান। কিন্তু কিছুতেই কিছু না হলে তারা ঘুরে ঘুরে গামছা পেতে অনুদান চাইতে শুরু করেন। যাতে তারা ছেলের দেহ এনে তার শেষকৃত্যটুকু করতে পারেন।
মহেশ ও মহেশের স্ত্রী এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে লোকজনের কাছে টাকা চাইছেন এই খবর চাউর হয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছয় এই খবর। পুরো বিষয়টি নিয়ে সমষ্টিপুর সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন এস কে চৌধুরী বলছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যারাই দোষী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছে প্রশাসন।