ফুলটি দেখলে ভ্রম হতে পারে যে কারো? কেননা এর আকৃতি অনেকটাই পুরুষদের যৌনাঙ্গের মতন। হঠাৎ করে দেখলে এই পতঙ্গ ভুক উদ্ভিদের ঊর্ধ্ব অংশটা দেখতে পুরুষদের যৌনাঙ্গের মাথার মত। তাই এই ফুলটি যে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে সে কথা বলাই বাহুল্য। আর এই কারণেই এই ফুলটি বর্তমানে বিপন্ন।
এই গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম নেপেনথেস বোকোরেনসিস। তবে বেশিরভাগ মানুষের কাছেই এর পরিচিতি ‘পেনিস ফ্লাই ট্র্যাপ’ (Penis Fly Trap) এই নামে। বহুল পরিচিত পতঙ্গভুক উদ্ভিদ কলসপত্রীর সমগোত্রীয় এই উদ্ভিদটি। পোকা-মাকড় এর রস শুষে এর জীবন ধারণ। কিন্তু প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালে, ফুলটির যে অংশের মাধ্যমে উদ্ভিদটি শিকার সংগ্রহ করে, সেই অংশটি দেখতে বেশ কিছুটা পুরুষদের যৌনাঙ্গের মতো। কম্বোডিয়ায় এক পাহাড়ে থরে থরে ফুটেছে এই ফুল। আর এই ফুলকে ঘিরে অতিরিক্ত কৌতুহলই উদ্ভিদটির সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কম্বোডিয়ার বোকোর পাহাড়ে শুট করা একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিয়োতে নজরে আসছেন কয়েক জন মহিলা উত্তেজনার সাথে ছিঁড়ছেন উদ্ভিদটি। পুরুষদের যৌনাঙ্গের মতো অংশটি ছিঁড়ে নিয়ে সেটি নিয়ে পোজ দিচ্ছেন। মুখের সামনে নিয়ে ছবি তুলছেন। এই উদ্ভিদটির অদ্ভুত আকৃতি নিয়ে কৌতুহলী জনতার অবিবেচক কর্মকান্ড দেখে চিন্তিত পরিবেশ কর্মীরা। উদ্ভিদের প্রজাতিটি বিপন্ন, নিন্দার ঝড় ওঠে এই কর্মকান্ডের। কম্বোডিয়ায় পর্যটন শিল্পের প্রসারও এই উদ্ভিদ এর বিলুপ্তির জন্য ‘সম্ভাব্যভাবে ঝুঁকিপূর্ণ’। তাই কম্বোডিয়ার পরিবেশ মন্ত্রক এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতন বিবৃতি জারি করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রকৃতির এই সম্পদটিকে ভালবাসার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। কিন্তু এগুলিকে ছিঁড়ে ফেলবেন না দয়া করে। যা আপনারা করছেন, তা অনুচিত কাজ। ভবিষ্যতে ফুল ছিঁড়ে ফেলার মতো কাজ থেকে বিরত থাকুন। কেননা এভাবে এইগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে’
প্রসঙ্গত এই উদ্ভিদ গুলি ‘পিচার প্ল্যান্ট’ নামে পরিচিত কারণ তাদের ফুলটি আসলে পরিবর্তিত পাতা। যা পিটফল ফাঁদ নামে পরিচিত যা কীটপতঙ্গকে মিষ্টি গন্ধ দিয়ে প্রলুব্ধ করে। ঠিক একটি মিছরির মতো।