প্লাজমা থেরাপিকে করোনার চিকিত্সার প্রটোকল থেকে বাদ দিয়ে দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর। আজই আইসিএমআর এই সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন জারি করেছে। এতদিন পর্যন্ত করোনা চিকিত্সায় বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ হতো। কিন্তু ১৪ মে আইসিএমআর প্লাজমা থেরাপির কার্যকারিতা নিয়ে একটি বৈঠক করে। সেখানেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্লাজমা থেরাপির যে কোনও কার্যকরিতা নেই সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। তারপরই করোনা চিকিৎসার প্রটোকল থেকে প্লাজমা থেরাপিকে বাদ দিল আইসিএমআর।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এখনও অবধি অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে ব্যাবহৃত হতো প্লাজমা থেরাপি। এই কারণেই প্লাজমা থেরাপি চালু করা হয় ভারতে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা অন্য কথা বলছে। দেখা গিয়েছে, কাজে আসছে না এই থেরাপি। ১৪ই মে এই নিয়ে বৈঠকে বসেন আইসিএমআর (ICMR) এবং ন্যাশনাল টাস্কফোর্স। বৈঠক শেষে করোনার চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে প্লাজমা থেরাপি বাদ দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে এই দুই সংস্থা। বর্তমানে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার ছিল।
কেন এই সিদ্ধান্ত? করোনা তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু প্রতিহত করার কনভালেসেন্ট প্লাজমার তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা দেখা যায়নি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (ICMR) ‘প্লাসিড ট্রায়াল’ নামে প্লাজমা থেরাপি ট্রায়ালে। প্রথাগত ট্রিটমেন্ট পেয়ে (প্লাজমা থেরাপী ছাড়া) করোনার কারণে মারা গিয়েছিলেন ১৮% রোগী এবং প্লাজমা থেরাপি পেয়েও করোনার কারনে মারা যান আরও ১৯% রোগী। আর কলকাতার প্লাজমা থেরাপির এক ট্রায়ালে দেখা গিয়েছিল, গুরুতর অসুস্থ মৃদু থেকে মাঝারি গুরুতর করোনা রোগীদের মধ্যে প্রথাগত ট্রিটমেন্ট পেয়ে যেখানে মারা গিয়েছেন ৩৪.৭৮% জন, সেইখানে করোনার প্রথাগত চিকিৎসার সঙ্গে প্লাজমা থেরাপি যোগ করায় মারা গিয়েছেন ১১.১১% রোগী। অর্থাৎ, মৃত্যুর শতাংশ দাড়ায় এক-তৃতীয়াংশেরও কম।
এক চিকিৎসক জানান, মৃদু থেকে মাঝারি করোনা উপসর্গের লোকেরা এই থেরাপিতে কিছুটা উপকার হলেও করোনার কারণে যাঁদের শরীরের জটিল আকার ধারণ করেছে, তাঁদের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি কোনো কার্যকরিতা। এমনকি স্টেরয়েডের ব্যবহার নিয়েও যথেষ্ট সতর্ক থাকতে বলেছেন দিল্লি এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া।