গত দেড় বছর ধরেই সারা বিশ্বের মত ভারতে থাবা বসিয়েছে করোনা অতিমারি। করোনার একের পর এক ঢেউয়ের ধাক্কায় ২০২০ সালের থেকেই জনজীবন প্রায় বিধ্বস্ত।
ক্রমাগত লকডাউনের ফলে অর্থনীতির অবস্থা সম্পূর্ন বিধ্বস্ত। কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।গত দেড় বছর ধরে মধ্যবিত্ত এবং নিন্মবিত্ত মানুষের জীবনে কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে করোনা অতিমারী (Pandemic)। করোনা সংক্রমিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয় তো আছেই , পাশাপাশি রোজগার না থাকার ফলে বহু মানুষের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করাটাই হয়ে দাঁড়াচ্ছে এক বিষম কঠিন কাজ। পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তার এক চরম কাজ। কঠিন পরিস্থিতিতে পেটের ভাত জোগাড় করতে মানুষ কতদূর যেতে পারে তার জ্বলন্ত নিদর্শন অসমের (Assam) ধরমতুল গ্রাম।
দারিদ্র ও অনাহারে বিপর্যস্ত অসমের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ অভাবে সেখানে কিডনি (Kidney) বিক্রি করছেন। ইতিমধ্যেই এই গ্রামে অন্তত ১২ জনের সন্ধান মিলেছে, যাঁরা তাঁদের কিডনি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন দারিদ্রের ছোবল থেকে বাঁচতে। তাঁদের অসহায়তার সুযোগ নিতে হাজির হয়ে গিয়েছে দালাল চক্রও। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ সংসার চালাতে কিডনি বিক্রি করছেন ৩-৪ লক্ষ টাকায়।
কলকাতার এক নামকরা হাসপাতাল জড়িয়ে রয়েছে এই পাচার চক্রের সঙ্গে।অসম পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে একজন মহিলাও। জানা যাচ্ছে ওই মহিলা ও তার ছেলে বিভিন্ন পরিবারের কাছে গিয়ে কিডনি বিক্রি করতে উসকানি দিত।
পুলিশ দু’জনকেই গ্রেপ্তার করেছে। চক্রের মাথাকেও ধরা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।গুয়াহাটি থেকে ৮৫ কিমি দূরে অবস্থিত এই গ্রামে মানুষ দারিদ্রের জ্বালায় তিতিবিরক্ত। কিন্তু কিডনী বিক্রি করেও তারা পাচ্ছে না সম্পুর্ন টাকা।
যেমন ৩৭ বছরের সুমন্ত দাস পেশায় রাজমিস্ত্রি। লকডাউনের পর থেকে আর কাজই পাননি সেভাবে। এদিকে তাঁর ছেলের হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র। অপারেশন করাতেই হবে।
অন্যদিকে ছোট সংস্থার থেকে নেওয়া ঋণের বোঝাও রয়েছে। অগত্যা ৫ লক্ষ টাকার জন্য নিজের কিডনি বিক্রি করে দেন তিনি। কিন্তু দালালরা তাঁকে দেড় লক্ষ টাকার বেশি দেননি। ওই টাকায় ছেলের অপারেশন হয়নি। এদিকে কিডনি হারিয়ে তিনিও হয়ে গিয়েছেন অশক্ত। জীবনে আর ভারী কাজ করতে পারবেন না।