ওড়িশায় দেখা গেল এক অনন্য বিয়ে। ওড়িশার ভুবনেশ্বরে এক অনন্য বিয়ে হয়েছে। যেখানে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে মন্দিরে এক কিন্নরকে (হিজড়াকে) বিয়ে করেছেন। জানা গেছে, গত এক বছর ধরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। যা তিনি স্ত্রীর কাছে উল্লেখ করেন, তারপর তিনি বিয়ের অনুমতি পান। এই অভিনব বিয়ে পুরো এলাকায় আলোচনার বিষয়। এই বিয়েতে কিন্নর সমাজের বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিয়েকে লিভ-ইন সম্পর্ক বা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক হিসেবে গণ্য করা হবে।
যে ব্যক্তি কিন্নরকে বিয়ে করেছে তার দুটি সন্তান রয়েছে। তারা জানিয়েছেন তারা এখন সবাই এক বাড়িতেই থাকবে। সেবকারি কিন্নর মহাসঙ্ঘের সভাপতি কামিনী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেন আমরা তাদের উভয়ের জন্য সুখী এবং তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য শুভ কামনা করি। যাইহোক, আইনত একজন ব্যক্তি তার প্রথম স্ত্রী থেকে ডিভোর্স না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে না। ওই ব্যক্তির স্ত্রীর সম্মতিতে এই বিয়ে হওয়ায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। একই সঙ্গে পুলিশ বলছে, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিন্নর কামিনী বলেন যে দেশের অনেক রাজ্যে একজন ব্যক্তি হিজড়াকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তু এখানে রঞ্জন ইতিমধ্যে বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে, তবুও তিনি আমাদের সম্প্রদায়ের একজন ট্রান্সজেন্ডারকে বিয়ে করেছেন। এটি আমাদের জন্য আনন্দের। এই বিয়ের আগে রঞ্জনের স্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়, তার পরই বিয়েতে রাজি হওয়া হয়।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিন্দু বিবাহ আইনে একজন পুরুষ তার স্ত্রী থাকা অবস্থায় অন্য বিয়ে করতে পারবেন না। তাই আইনগতভাবে এ বিয়ে কোনোভাবেই বৈধতা পেতে পারে না।
ওড়িশা হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শ্রীনিবাস মোহান্তি বলেছেন, হিন্দু রীতি অনুযায়ী একজনকে অন্য বিয়ে করার আগে আইনত আলাদা হতে হয়। দুজনের বিয়ে হলেও এই বিয়ে লিভ-ইন সম্পর্ক বা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক হিসেবেই পরিচিত হবে। অবশ্য এই বিয়েতে প্রেমিক যুগল বেশ খুশি, এই বিয়ে নিয়ে পুরো এলাকায় সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। এই বিয়েতে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের দুজনের নতুন বিবাহিত জীবনের শুভেচ্ছা জানান।