ফরিদাবাদের বাসিন্দা আরতি মালহোত্রার ছেলে প্রায় ৬ মাস আগে ফেব্রুয়ারি মাসে আত্মহত্যা করেছিলেন। কিন্তু এখন তার মা আরতি নিজের মৃত ছেলের বিচার চাইছেন। আরতি অভিযোগ করেছেন যে তার ছেলেকে তার যৌনতার জন্য স্কুলে হেনস্থা করা হয়েছিল। এ কারণে তার ছেলের অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
আরতির অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পরও বিষয়টি থমকে যায়। ‘হিউম্যানস অফ বোম্বে’-তে তিনি এই ঘটনার উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান কিভাবে তার ছেলের সহপাঠিরা তাকে ক্রমাগত হুমকি দেয়, এমনকি তাকে যৌন হয়রানি করে।
আরতি জানান, তার ছেলে যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ত, তখন থেকেই তাকে নির্যাতন করা হয়। আরতি জানান, তার ছেলে বলত ক্লাসের ছেলেরা তাকে ‘ছক্কা’ বলে। আমিও ডিপিএস স্কুলে শিক্ষক ছিলাম। আমি স্কুল প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তারা বলেছিল, এটা কিছুই না।
আরতি বলেন, ছেলেকে বলতাম সব ঠিক হয়ে যাবে। ও ভলিবল খেলতো এবং নিজেকে ‘পুরুষ’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু এই সব ওর জন্য ছিল না। ও শিল্প ও সঙ্গীত পছন্দ করতো। এসব নিয়েই ও খুশি থাকতো। কিন্তু প্রতি পদে পদে ওকে ওর পছন্দ অপছন্দ নিয়ে উপহাস করা হয়েছে।
আরতির মতে, তার ছেলে যখন নবম শ্রেণীতে ওঠে, তখন স্কুলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। সে তার মাকে জানিয়েছিল যে তার ক্লাসের ছেলেরা তার চোখ বেঁধে তাকে তার কাপড় খুলতে বলেছিল। আরতি বলেন “আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে তারা যৌন হয়রানির শিকার বানিয়েছিল।”
আরতি জানান, স্কুল ব্যবস্থা নিতে অস্বীকার করে। এটা আমাকে ভীষণ হতবাক করেছিল। আমি অনেক থেরাপিস্টের কাছে গিয়েছিলাম। ছেলে ডিপ্রেশনে ছিল। শিল্পের প্রতি তার আগ্রহও ম্লান হতে থাকে। দশম শ্রেণিতে পড়া কঠিন হয়ে পড়ে। বোর্ড পরীক্ষাও আসতে চলছিল। কিন্তু ও স্কুলে যেতেও ভয় পেত।
আরতি জানান, তার ছেলে একদিন বলেছিল যে সে নেইল পেইন্ট লাগাতে এবং গয়না পরতে পছন্দ করে। আরতি তাকে জিজ্ঞেস করেছিল তখন যে তুমি কে? ‘পরীক্ষার জন্য স্কুল খুললে সে আমাকে ফোনে বলল, সে পরীক্ষা দিতে চায় না। ও কাঁদতে থাকে। আমি তাকে মেসেজ করে পরীক্ষা ছেড়ে যেতে বলেছিলাম, কিন্তু সে উত্তর দেয়নি।’ আরতি জানান।
আরতি জানান, এক ঘণ্টা পর তার সোসাইটি থেকে ফোন আসে যে তার ছেলে কিছু করেছে। আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললাম। আমি যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন সে মারা গেছে। ও ১৫ তলা থেকে লাফ দিয়েছিল। ও ওর সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছিল আমি সেরা মা। ও আমাকে নতুন চাকরি খুঁজতেও লিখে গিয়েছিল।