পাড়ার দাদু। পাড়ার দুই নাবালিকা মেয়ে তাকে দাদু বলেই ডাকতো। এদিকে দাদুর মত নিয়ে স্নেহ দেখিয়ে কখনো মিষ্টি, কখনো বা চকলেট লজেন্স এই সব কিছুর প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ডেকে নিয়ে যেত ওই ব্যক্তি। কিন্তু এরপরেই আসল রূপ ধরতো ওই ব্যক্তি। দুই নাবালিকাকে শিকার বানাতো নিজের যৌন লালসার। দীর্ঘদিন চলছিল এইভাবেই। কিন্তু একদিন হঠাৎই জানাজানি হয়ে যায় পৌঢ়র কীর্তি। তারপরেই খবর পৌঁছয় পুলিশে।
টিভি ৯ বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি এলাকায়। ঘটনায় অভিযুক্তের নাম অজয় মন্ডল। বছর ছেচলিশের অজয় মন্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।এই অভিযুক্ত রাজমিস্ত্রির কাজ করে। পুলিশ সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ওই ধৃতের স্ত্রী বহুদিন আগেই তার এই সমস্ত কান্ড জানতে পেরে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। রাজমিস্ত্রি সেই সময় থেকেই একা থাকতে শুরু করেন। তবুও নিজেকে বদলাননি কখনই। ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, যে কয়েকদিন ধরেই দুপুর ও বিকেলে দুই নাবালিকাকে খাবারের টোপ দিয়ে বাড়িতে ডেকে যৌন নির্যাতন চালাত অজয়। আর তারপরই ওই দুই নাবালিকা যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে শেষে বাড়িতে সব কিছু জানিয়ে দেয়। ওই নাবালিকাদের পরিবার থেকে সমস্ত ব্যাপার পুলিশের কাছে জানানো হয় এবং অজয়ের বিরুদ্ধে যৌন অত্যাচারের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই অজয়কে গ্রেফতার করেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ পোক্সো আইনে মামলা দায়ের করেছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। ধৃতকে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে শনিবার দুপুরে দু’দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি আলিপুর পোক্সো আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ওই এলাকায় প্রচন্ড উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তারমধ্যে আদালতে ওই অভিযুক্তের নিরাপত্তা নিয়েও অনেক সংশয় দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তি চেয়েছেন।
দুই নির্যাতিতার মধ্যে এক নাবালিকার মা জানান, “ খেলা করছিল বাচ্চারা, অজয় বাবু দাদু হিসেবে যেমন রোজকার মতো ডাকেন তেমনই ডেকেছিলেন। আর ওরা দুজনে রোজকার মতই গিয়েছিলো। সেদিন জানলাম যে রোজ ওদের বিস্কুট খেতে দিয়ে খারাপ কাজ করতো ওদের সাথে। প্রথম দিকে ওরা কিছুই জানাতে চায়নি। পরে সবার চাপাচাপিতে ওরা সব কথা জানায়। পরে জানতে পারি যে ওরা একা নয় বাকি বাচ্চাদের সাথেও একই কাজ করেছে অজয় বাবু। আর তারপরই সমস্ত কথা আমরা পুলিশকে জানাই। পুলিশ সেই সময়ই তাকে গ্রেফতার করেছে।”