বয়সজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বয়স্ক বাবার। কিন্তু সেই মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি ছেলে। শোক সামলাতে না পেরে তাই বাবার শেষকৃত্যের আগেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। মর্মান্তিক মৃত্যুর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) বাঁশদ্রোণি এলাকায়। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
পুলিশের সূত্রে জানানো হয়েছে এই ব্যক্তি বাঁশদ্রোণি গভর্নমেন্ট কলোনির বাসিন্দা ছিলেন। ওই অঞ্চলের একটি বাড়িতে এক সাথেই বাস করতেন ৭৬ বছর বয়সী পিতা বিজয়েন্দ্র দত্ত মজুমদার ও তাঁর ছেলে সম্রাট দত্ত মজুমদার। ছেলের বয়স ছিল ৪৪। বৃদ্ধের স্ত্রীর বহুদিন আগেই মারা গিয়েছেন। মা মারা যাওয়ার পর থেকেই নাকি সম্রাট মানসিক অবসাদের ভুগছিলেন। মা মারা যাওয়ার পর বৃদ্ধ বাবার সমস্ত দেখাশোনা করতেন সম্রাট বাবু। তার সমস্ত বিষয়ের খেয়াল তিনিই রাখতেন।
কিন্তু কয়েকদিন আগে থেকেই বয়সজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিজয়েন্দ্রবাবু। যতদিন এগোয় অবনতি হয় তার শারীরিক অবস্থার। গত রবিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন ৭৬ বছরের বৃদ্ধ। চিকিৎসককে ডাকলে তিনি রাতে বাড়িতে বিজয়েন্দ্রবাবু কে মৃত বলে ঘোষণা করে ডেথ সার্টিফিকেট দেন। খবর দেওয়া হয় আত্মীয় স্বজনদেরও। নেতাজিনগর অঞ্চলে থাকেন দত্ত মজুমদার পরিবারের এক আত্মীয়। খবর পেয়ে তিনি আসেন বিজয়েন্দ্রবাবুর শেষকৃত্যের জন্য।
আত্মীয়রা পৌঁছলে দেখেন বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা রয়েছে। বারংবার ধাক্কা দিলেও মেলেনি কোনও সাড়া শব্দ। উপায় না পেয়ে আত্মীয়রা প্রতিবেশীদের সাথে মিলে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন। ঢুকতেই চোখে পড়ে এক মর্মান্তিক দৃশ্য। দেখা যায়, যে ঘরে মৃত বাবার দেহ শোয়ানো আছে, সেই ঘরেরই সিলিং ফ্যান থেকে গলায় দড়ি ও কাপড়ের ফাঁস দিয়ে ঝুলছে ছেলে সম্রাট। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন সম্রাট। মানসিক অবসাদের শিকার সম্রাট বাবার মৃত্যুর শোক মানতে পারেননি, আর সেই কারণেই বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখবে পুলিশ এমনটাই জানানো হয়েছে।