অন্ধ কুসংস্কারের কারণে প্রাণ হারালেন অন্তঃসত্ত্বা মা। স্ত্রী সাক্ষাৎ কালী ভেবে তাঁকে খুন করল তন্ত্রসাধক স্বামী। স্ত্রীকে কালী রুপে কল্পনা করতেন স্বামী। স্বামীর বিশ্বাস ছিল, স্ত্রীর কোপে পরে তাঁদের গ্রামের ধ্বংস হবে। গ্রামকে রক্ষা করতে তাই শেষমেষ স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিল স্বামী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থানার বোয়ালদার পঞ্চায়েতের সৈয়দপুর এলাকায়। পুলিশ গ্রেফতার করেছে স্বামীকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চারদিন ধরে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না ওই মহিলার। মহিলার বাপের বাড়ির পরিজনেরা এরপর বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। মহিলার সন্ধানে নেমে পুলিশ নানা সূত্র ধরে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে।
তদন্তের সূত্রে সৈয়দপুরে মহিলার বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ বুঝতে পারে এখানেই কিছু গন্ডগোল। স্বামী স্বপন কিস্কু নামে ওই ব্যাক্তি তন্ত্র সাধনায় বিশ্বাসী ছিল। তিনি নিজেকে শিব এবং তাঁর স্ত্রী কে কালী মনে করত। আর সেই ভাবনা থেকেই স্ত্রীকে হত্যা করেছে সে। এর পরই পুলিশ ওই ব্যক্তীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
চাঁদমনি পাহান মৃত মহিলার নাম। তাঁদের বিয়ে পাঁচ বছর আগে হয়। তাঁদের ৪ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জে আত্রাই নদীর তীরে এদিন সকালে এক নগ্ন মহিলার দেহ দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে।
স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ মহিলার পরিচয় জানতে পেরে। জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরে বাড়িতে একাধিক দেব দেবীর মূর্তি স্থাপন করে ধৃত স্বপন সাধনা করত। তাঁর সেই সাধনার পরই ধারণা হয়, স্ত্রী কালী। তাঁর স্ত্রী পুরো গ্রামকে নাকি ধংস করে দেবেন!
ওই ব্যক্তি ৪ ফেব্রুয়ারি স্ত্রীকে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে পাগলিগঞ্জে আত্রাই নদীরে তীরে নিয়ে এসে স্বাসরোধ করে খুন করে। গ্রামকে কালীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এর পর বাড়িতে গিয়ে পুজো অর্চনা করে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁর স্বামী স্ত্রীকে খুন করেছে সাধনা করতে গিয়ে।