মানুষ কতটা নৃশংস হতে পারে এই ঘটনাই তার প্রমাণ যে নিজের মাত্র দু’দিন বয়সী শিশুকন্যার ক্ষতি করতেও তার হাত কাঁপে না! সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের পালামৌ তে এক বাবা তার নবজাতক সন্তানকে মেরে ফেলার মত চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটির মা তার স্বামীর বিরুদ্ধে পালামৌর মেদিনীনগর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত বাবাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে পালামৌ জেলার চাওনপুর থানা এলাকার গাঙ্গীর বাসিন্দা এক মহিলা সীতা চৌধুরী গত ৩রা এপ্রিল সাহিত্য সমাজ চকের কাছে সোনা নার্সিং হোমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর সদ্যোজাত মেয়েটির কিছু ইনজেকশন ও ওষুধের প্রয়োজন ছিল। ওষুধের প্রেসক্রিপশন নার্সিংহোম থেকে তার বাবা অরুণ চৌধুরীর হাতে দেওয়া হয়েছিল কিনে আনার জন্য। কিন্তু অরুণ চৌধুরী নার্সিংহোমের ডিসপেনসারি থেকে ওষুধ ও ইনজেকশন কেনেননি। বরং বাইরের কোথাও থেকে ওষুধ আর ইনজেকশন এনেছিল।
আসলে, শিশুটির বাবা অরুণ নামক ওই ব্যক্তি একটি প্যাথলজিতে কাজ করে। তাই নিজে নিজেই তার শিশুকন্যা কে ওষুধ খাওয়ান এবং তারপর নিজেই ইনজেকশন দেন। হাসপাতালের কর্মীরা অরুণ চৌধুরী কে তা করতে নিষেধ করলেও তিনি রাজি হননি। হসপিটাল কর্মীদের মতে, অরুণ মেয়েটিকে ইনজেকশন দেওয়ার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে দেখে মেয়েটিকে নার্সিং হোম থেকে সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই মেয়েটির মৃত্যু হয়। মেয়েটির মৃত্যুর খবর পেয়ে তার মা সীতা চৌধুরী তার স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনে থানায় এফআইআর দায়ের করেন।
মহিলার তার অভিযোগে জানিয়েছেন তাঁর স্বামী কখনও চাননি যে তিনি মা হন। এর আগেও দুবার তার জোর করে গর্ভপাত করানো হয়েছে। কয়েকদিন আগে তাকেও খাবারে বিষ মিশিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। স্বামী ছাড়াও সেই ঘৃনিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন শ্বশুর লালজি চৌধুরী, শাশুড়ি পানপতি দেবী, ও দেওর অজিত চৌধুরীও।
ওই মহিলা আরো জানান, নার্সিংহোমের চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা তার স্বামীকে বাধা দেবার পরও সে মেয়েটিকে নিজে নিজেই ভুল ইনজেকশন দেন, যার ফলে তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে মহিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এই বিষয়ে নার্সিংহোমের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে নার্সিং হোমের গাফিলতিতে মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুরও করেছে পরিবার। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। বর্তমানে তার স্বামীকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে।