যৌতুকে মোটর বাইক না পেয়ে মারাত্বক কান্ড ঘটালেন এক ব্যাক্তি। যার মূল্য চুকাতে হলো তার নিরীহ শিশু শালাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ওই অভিযুক্তের নাম সোহেল শেখ। থানারপাড়া থানার সাহেবপাড়ার মালিতা পাড়ায় বছর চব্বিশের ওই অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি। এই ঘটনায় বিহারের পূর্ণিয়া জেলার গটপুর গ্রামে মৃত শিশু দিল ইসলামের (৬) বাড়ি। বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা মহম্মদ মনিরুলের মেয়ে শাহজাদি বিবির সঙ্গে সাড়ে তিন মাস আগে বিয়ে হয় সোহেলের। শ্বশুরের কাছে সোহেল বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে একটি মোটরবাইক চেয়েছিল। মাঝেমধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়ে ঝামেলাও হত তার। শাহজাদি বিবি বিয়ের পর প্রথমবার বিহারের পূর্ণিয়ায় নিজের বাবার বাড়িতে যান। সম্প্রতি শশুর বাড়ি ফিরে আসার আগে দিদির সঙ্গে আসার জেদ ধরে বসে শাহজাদির ভাই দিল ইসলাম। তাই শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন শাহজাদি বিবি নিজের ভাইকে সাথে নিয়েই।
তাদের দেখে সোহেল মেজাজ হারিয়ে ফেলে কারণ বিয়েতে যৌতুক হিসেবে চাওয়া মোটরবাইক ছাড়াই স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে ফিরে এসেছে। সাথে সাথেই স্ত্রীকে মারধর করতে শুরু করে সোহেল। তীব্র রেগে ছিলেন সোহেল মোটরবাইক না পেয়ে। তারপর গত বুধবার ছোট্ট শালা দিল ইসলামকে নিয়ে বিকেলে ধোড়াদহ বাজারে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে পড়ে সে বাড়ি থেকে। এরপর থেকে দিলের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না আর। আসল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সোহেল নিজেও পাড়ার লোকদের ডেকে এনে খুঁজতে বেরোয় দিল কে। এও জানা গিয়েছে যে শালা কে খুঁজতে নিজের টাকা খরচা করে মাইকিং ও করে সোহেল।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নামার পর ধোড়াদহ বাজারে এক ব্যবসায়ীর লাগানো সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, যে গত বুধবার দিন রাত দশটা নাগাদ শিশুটিকে কাঁধে করে সাইকেলে চেপে জলঙ্গি নদীর দিকে যায় সোহেল। পুলিশ সাথে সাথেই সোহেল কে শনাক্ত করে নেয় ওই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। সে সময় পুলিশের কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করে । বলে, “ ছোট শালার মুখে সিঙারা ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করি ধোড়াদহ বাজারের কাছে স্কুলের পাঁচিলের আড়ালে গিয়ে। কেউ যাতে সন্দেহ না করে খুনের পর, তার জন্য জলঙ্গি নদী পেরিয়ে মুর্শিদাবাদের দিকে ফুলবাড়ি এলাকায় নিয়ে যাই সাইকেলে চাপিয়ে। সেখানে শালাকে এক নদীর ধারের জঙ্গলের মধ্যে ফেলে আসি।” শুক্রবার বিকেলে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ তাকে সাথে নিয়েই ওই ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। শনিবার অভিযুক্তকে তেহট্ট মহকুমা আদালতে তোলা হবে দেহটির ময়নাতদন্তে পাঠানোর পর।