যতই সরকার বিধি-নিষেধ লাগু করুক, করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক হারে বাড়ুক, পেটের দায় বড় দায়, তাই ট্রেনে নিত্যযাত্রীদেরর অস্বাভাবিক ভিড়ের চাপ। এমন অবস্থায় শুরু হয়েছে কিছুটা বিশৃঙ্খলা ও। করোনা সম্পর্কিত বিধিনিষেধ প্রয়োগের প্রথম দিনেই সামনে এসেছিল কিছু দুর্ঘটনার খবর, ভাগ্যক্রমে তারা সকলে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল কিন্তু এবারে সামনে এল এমন একটি খবর যা রীতিমতো মর্মান্তিক। অস্বাভাবিক ভিড়ের কারণে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক যাত্রীর। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির (Hooghly) ডানকুনি-বেলানগর রেললাইনের মাঝে সকালের দিকে। ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার পর গুরুতর আহত ওই যাত্রীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় দুটি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা সমস্ত রকম চেষ্টা করার পরেও শেষরক্ষা হল না। দুপুর নাগাদ তিনি মারা যান। এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে ডানকুনি (Dankuni) শাখায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় যাত্রীদের মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, যাত্রী অনুযায়ী পর্যাপ্ত ট্রেন না থাকার কারণেই এমন অঘটন ঘটেছে।
রেল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় যিনি মারা গেছেন তার নাম চন্দন প্রচণ্ড, বয়স ৫৫ বছর। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বাসিন্দা। কিছুদিন আগে ডানকুনি এসেছিলেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। আজ ডানকুনি থেকে নিজের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য লোকাল ট্রেন ধরেন হাওড়ার উদ্দেশ্যে। কথা ছিল খড়গপুর হয়ে চন্দ্রকোণা ফিরবেন।
সেইমতো ডানকুনি থেকে হাওড়া গামী একটি লোকাল ট্রেনে ওঠেন তিনি। ট্রেনটিতে ভীষণ ভিড় ছিল। কোনওক্রমে গেট ধরে উঠেছিলেন, পুরো শরীর ঝুলছিল ট্রেনের বাইরে। তবে কোনক্রমে ধরেছিলেন ট্রেনের হাতল। বেলানগর স্টেশন পৌঁছনোর আগেই ভিড়ের চাপে কোনওভাবে ট্রেনের হাতল থেকে তার হাত ফসকে যায়। পড়ে যান তিনি ট্রেন থেকে। জখম অবস্থায় রেলট্র্যাক থেকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করেন। এরপরই আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও চিকিৎসার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন জারি করেছে কড়া বিধিনিষেধ। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী লোকাল ট্রেন, মেট্রো ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করার কথা। রাত ১০টার পর আর চলবে না লোকাল ট্রেন । কিন্তু ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে তো দূর অস্ত, মানুষ রোজ ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেনেই যাতায়াত করছেন এখনও। ডানকুনি লাইনে ট্রেনের সংখ্যা এমনিই কম। ফলে ভিড় প্রচন্ড। কিন্তু এমন অবস্থায় এই ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় যাত্রীরা ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, ট্রেন পর্যাপ্ত না থাকার কারণেই এত ভিড় আর তাতেই ওই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। রেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা।