গ্রামবাসীর সন্দেহের কারণে কোনো দোষ না করেই মারা গেলেন যুবক। একটু বেশি রাতের দিকে বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম এক যুবক। কিন্তু তাদের দেখে চোর সন্দেহ করে বসে গ্রামের লোকেরা। ফলত সকলে মিলে মারতে শুরু করেন তাদের। মেয়েটি পালিয়ে গেলেও মারের আঘাতে বাঁচতে পারেননি যুবক। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। মর্মান্তিক পরিণতি শিকার হলেন দক্ষিণ কলকাতার নেতাজিনগর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই বছর পঁয়ত্রিশ এর যুবক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যুবকের নাম অভীক মুখোপাধ্যায়। পেশায় প্রোমোটার ওই যুবক। তাঁর বান্ধবী প্রিয়াঙ্কা সরকার একটি বারে ডান্সার হিসেবে কর্মরত। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় একটা নাগাদ বান্ধবী প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে বারুইপুরের বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনির নিকটে যান অভীক। এত রাতে অচেনা যুবককে এইভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয় সে এলাকার লোকজনের। অভীক মুখার্জি নামক ওই যুবক কে চোর সন্দেহে ঘিরে ফেলা হয়। মেয়েটি গা ঢাকা দিলেও অভীকের উপর চড়াও হয় গ্রামবাসীরা। প্রচণ্ড মারধর করা হয় ওই যুবককে। মারের চোটে সেখানেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছলেও বাঁচাতে পারেনি তাকে।
ঘটনাস্থলে পুলিশের গাড়ি এলে সেই গাড়ি অবরোধ করে গ্রামবাসীরা। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে চোরকে সহযোগিতা এসেছে তারা। যদিও সব প্রতিরোধ ভেঙ্গে অচৈতন্য যুবককে উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
অভীকের বন্ধুরা অভিযোগ করেছে, রীতিমত পরিকল্পনা করে তাঁকে খুন করা হল। এদিকে, প্রিয়াঙ্কার মা জানান, “আমার মেয়ে মানসিকভাবে সুস্থ নয়। ও গত ছয়মাস ধরে অসুস্থ। রাতের বেলায় বন্ধুদের সাথে বেরিয়ে যেত বলে আমি ওকে নিজের কাছে এনে রেখেছিলাম। ওকে আমি অনেকবার বাঁধা দিয়েছি যাতে রাত্রি বেলা এইভাবে বেরিয়ে না যায়। ও একটি বারে নাচ করে। গতকাল আমায় জানায় যে ও একটু বেরোচ্ছে। তবে কার সাথে বেরিয়েছিল জানি না। কিন্তু ও যদি কোনও অপরাধ করে থাকে তাহলে অবশ্যই ওর শাস্তি হওয়া উচিৎ।” ঘটনার তদন্তে নেমেছে বারুইপুর থানার পুলিশ।