রাজস্থানের উদয়পুর পুলিশ খুনে অভিযুক্ত এমন এক পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করতে সফল হয়েছে, যে গত ২৮ বছর ধরে পলাতক ছিল। অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে ২৮ বছর আগে এক শ্রমিককে খুন করেছিল অভিযুক্ত তার শ্যালকের সঙ্গে। পরে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে জাওয়ার মাইনস থানা পুলিশ তাকে ধরেছে। সেখানে এই অভিযুক্ত গার্ডের কাজ করত। তাঁর শ্যালক, অভিযুক্তের সহযোগী, পাঁচ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন।
জাওয়ার মাইনস পুলিশ অফিসার বাবুলাল মুরারিয়া জানান, ১৯৯৩ সালে জাওয়ার খনি এলাকার বাবর মালে শাব্বির হোসেনের একটি খনি ছিল। বিহারের জামুইয়ের বাসিন্দা রণবিজয় সিং ওরফে রানা পবন সিং সেখানে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। নিজের গ্রামের সমীর সিং নামে এক যুবককে সে খনিতে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করেছিল। কিছুক্ষণ পর সমীর সিং খনিতে কাজ ছেড়ে মাকরানায় চলে যান। সমীরের মা ও বোন উদয়পুরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
রণবিজয় সমীরকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল কারণ রণবিজয় সিংও পরে তার স্ত্রীকে গ্রাম থেকে উদয়পুরে নিয়ে আসে এবং সমীরের পাশের ঘরে থাকতে শুরু করে। সমীর তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে উদয়পুরে আসতেন। এই সময় রণবিজয় সিংয়ের স্ত্রীর সঙ্গে সমীরের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। একদিন হিসাবরক্ষক রণবিজয় সিং তার সঙ্গে সমীরকে সন্দেহজনক অবস্থায় দেখেন। এরপর তিনি ও তার শ্যালক দুজনে মিলে সমীরকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
বাবর যখন মলে পৌঁছায়, রণবিজয় তাকে মদের পার্টি দিতে বলে। মদের পার্টি সেরে সবাই যার যার ঘরে ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু রণবিজয় সিং, শ্যালক বিপিন সহ সমীরের মাথায় মদের বোতল মারেন। এতে আহত হন সমীর। পরে রণবিজয় তাকে পাথর মেরে হত্যা করে। ঘটনার পর অভিযুক্ত দুজনই ধরা পড়ার ভয়ে খনির ঘরে পড়ে থাকা ব্লাস্টিং বারুদ ও ডিজেল ঢেলে সমীরের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অভিযুক্তরা লোকজনকে সমীরের মৃত্যুর মিথ্যে গল্প বলে, ব্লাস্টিং শব্দ করে। তার কথা শুনে আশেপাশে অনেক লোক জড়ো হলেও দুজনেই বারুদের আঘাতে সমীরের মৃত্যুর মিথ্যা গল্প বানান। এ ঘটনায় খনি মালিক শাব্বির হোসেন একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। পুলিশি তদন্ত শুরু হলে অভিযুক্ত দুজনই পলাতক হয়ে যান। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে একাধিকবার দল গঠন করেও সফল হয়নি।
অবশেষে, ২৮ বছর পর, প্রধান অভিযুক্ত রণবিজয় ওরফে রানা পবন সিং নয়ডায় গার্ড হিসাবে কাজ করার সময় উদয়পুর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। অপরাধের সঙ্গে জড়িত দ্বিতীয় আসামি বিপিন প্রায় ৫ বছর আগে অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মারা গেছে। অভিযুক্তকে ধরার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে পুলিশ। রণবিজয় পলাতক হওয়ার পর কোথায় লুকিয়ে ছিলেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।