পুরুষ-নারী নির্বিশেষে হস্তমৈথুন খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। হস্তমৈথুন ঘিরে বহু এমন মিথ বা জল্পনা রয়েছে, যার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। হস্তমৈথুন একটি সহজাত প্রক্রিয়া। ক্ষতিকর নয় বলেই। কিন্তু যে কোনও কিছুই যদি অতিরিক্ত হলে তার পরিণতি খারাপ হতেই পারে। হস্তমৈথুনের ক্ষেত্রেও এই এক কথাই প্রযোজ্য। স্বাভাবিক চাহিদার ঊর্ধ্বে গিয়ে হস্তমৈথুনের নেশা বা হস্তমৈথুন ঘিরে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়ে অনেকে বিপদ ডেকে আনেন। সেই প্রমাণই পাওয়া গেল আরও একবার। সম্প্রতি জাপানে মাত্রারিক্ত হস্তমৈথুনের শিকার হয় এক ব্যাক্তি। অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের কারণে স্ট্রোক হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সেই ৫১ বছরের বয়সী ব্যক্তি।
জাপানের নাগোয়ার ঘটনা এটি। ওই ব্যাক্তি বারং বার হস্তমৈথুন করছিলেন। এরম চলতে চলতে তিনি হঠাৎ দুর্বলতা অনুভব করেন। মাথা ঘুরতে থাকে, শুরু হয় বমি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি কোনওমতে খবর দেন স্বাস্থ্য পরিষেবায়। খবর পেয়ে চিকিত্সার জন্যে তাঁকে নাগোয়া সিটি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর রক্তচাপ ঠেকেছে তলানিতে। সাথে সাথে প্রলাপও বকছেন ওই ব্যক্তি। উপসর্গগুলি যে ব্রেন স্ট্রোকের ত বুঝতে বেশি সময় লাগেনি চিকিত্সকদের।
সিটি স্ক্যান করে জানা গিয়েছে, ৫১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির subarachnoid hemorrhage (SAH) হয়েছে। মস্তিস্কের রক্তনালি ছিঁড়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে এমনটা হয়। তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না মিললে অনেকক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যু অবশ্যসম্ভাবী।
হাসপাতালের ট্রিটমেন্ট এর ফলে এখন সুস্থ আছেন ওই ব্যক্তি। চিকিৎসকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, হস্তমৈথুন করা তার কাছে নেশার মতন। রোজ রোজ অসংখ্যবার হস্তমৈথুন করতে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। এমন একদিন একাধিক বার হস্তমৈথুন করার সময়ে এই ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।
নিউরোসাইকোলজিস্ট ডঃ এইমি বাইর্ড-এর কথায়, ওই ব্যাক্তির ‘রাপচার্ড অ্যানিউরিজম-এর সমস্যা হয়েছিল।এমন ধরনের ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনাগুলির প্রায় ১৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে আক্রান্ত ব্যাক্তি সেই সময় বা ঠিক তার আগে যৌনতা মূলক ক্রিয়া কলাপে লিপ্ত ছিলেন। এর মধ্যে হস্তমৈথুনও পড়ে। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হস্তমৈথুনে যে শুধুমাত্র স্ট্রোক সংক্রান্ত বিপদের ঝুঁকি বাড়ে তাই নয়, অত্যধিক হস্তমৈথুনের ফলে সময়ের আগেই শরীর থেকে বীর্যপাত হয়। ফলে, স্বাভাবিক যৌনজীবন আর স্বাভাবিকতা থাকে না। এমনকি বহু ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গ দুর্বল হয়ে পড়ে। স্পার্ম কাউন্টও কমে যায়। তাই অতিরিক্ত নয়, খুব স্বাভাবিক হস্তমৈথুনের পথেই থাকুন।