পদ্মানদীতে বজ্রপাতের ঘটনায় একই সাথে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। তাঁরা সবাই ছিলেন বরযাত্রী। একটি নৌকাতে চেপে বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। বাংলাদেশের শিবগঞ্জে পদ্মা নদীর উপর এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। বরযাত্রীদের এই নৌকায় থাকা সহযাত্রীদের মধ্যে আরও ৬ জন বজ্রপাতে আহত হয়েছেন। সেই আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের শরীর ঝলসে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশের (Bangladesh) চাঁপাইনবাবগঞ্জে (Chapainawabganj) জেলার শিবগঞ্জে বুধবার বেলা ১২ টার দিকে পদ্মানদী নৌকা দিয়ে একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন ২৫ জন বরযাত্রী। নৌকায় ২৫ জন বরযাত্রী ছাড়াও ১০ জন গ্রামবাসী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতারহাট গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে চার দিন আগেই বিয়ে করেন পাশের ইউনিয়ন শিবগঞ্জের পাঁকা গ্রামে। বিয়ে হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই।
নববিবাহিত দম্পতিকে আনতেই বরযাত্রীরা নৌকা করে শিবগঞ্জে পৌঁছন। কিন্তু শিবগঞ্জ ঘাটে নৌকা ভিরতেই আকাশে জমে আসে কালো মেঘ। দেখতে দেখতে পথের মধ্যেই শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। সাথে সাথেই শুরু হয় মুহুর্মুহু বজ্রপাত। বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে তড়িঘড়ি বরযাত্রীর দল শিবগঞ্জে ঘাটেই নদীর ধারে একটি টিনের চালের ঘরেই আশ্রয় নেন। কিন্তু এই আশ্রয় তাদের শেষ রক্ষা হল না। আকস্মিক ওই টিনের ঘরেই পড়ল বাজ। বাজ পড়ার সাথে সাথেই মৃত্যু হয় ১৬ জন বরযাত্রীর। মৃত্যু হয় বরের বাবা, দাদা, দিদি,মাসী ও মেসো, মাসতুতো ভাই, মামা-মামি ও মামাতো ভাই। আরও বহু জনের। এ ছাড়া বজ্রাঘাতে মৃতদের মধ্যে ছিলেন চার জন পড়শিও। পুলিশ এসে মৃত বরযাত্রীদের দেহ উদ্ধার করেছে। তারপরে ঘটনাস্থলে আসে দমকলও।
বাজ পড়ে ঝলসে জখম হওয়া ৪ জনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঁদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। আবহাওয়া বিশারদরা জানিয়েছেন বজ্রপাতের দরুন বাংলাদেশে মৃত্যুর ঘটনাও বেশ বেড়েছে গত কয়েক বছরে ধরে। বিশেষত বাংলাদেশের উত্তরভাগ এবং উত্তর পশ্চিমাঞ্চলকে বজ্রপাত-প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে পরীক্ষামূলক ভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সরও বসানো হয়েছে। কিন্তু গতকাল একই সাথে বজ্রপাতে এতজনের মৃত্যু শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। এই ঘটনায় সমবেদনা জানিয়ে হতাহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসন আর্থিক এবং প্রশাসনিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।