প্রয়াত বলিউডে কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। আজ বুধবার ৭ জুলাই ভোর ৭টা ৩০ মিনিটে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারী হাসপাতালে, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দিলীপ কুমার। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে কিছুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন তিনি।
ভারতের লিজেন্ডারি অভিনেতাদের একজন হলেন মুঘল – ই – আজম খ্যাত দিলীপ কুমার। জেনে নিন এই কিংবদন্তি অভিনেতা জীবনের কিছু অজানা কথা।
দিলীপ কুমারের জন্ম পাকিস্তানের পেশোয়ারে। ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বরে পাকিস্তানের একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দিলীপ কুমারের আসল নাম ছিল মুহাম্মদ ইউসুফ খান। তাঁর পিতা লালা গোলাম সারওয়ার পাকিস্তানে ফলের ব্যাবসা করতেন। দিলীপ কুমারের মায়ের নাম আয়েশা বেগম।
জানেন কি খালসা কলেজে পড়ার সময় দিলীপ কুমারের সহপাঠী ছিলো রাজ কাপুর। তাঁরা এক সঙ্গে ঘোড়ার গাড়িতে করে প্রায় ঘুরে বেড়াতেন সেই সময়ে।
দিলীপ কুমারের পরিবারের ছিল পাকিস্তানে ফলের ব্যবসা। সেই ব্যবসাও কিছুদিন দেখাশোনা করেছেন দিলীপ কুমার।
একদিন বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে বাড়ি থেকে চলে যান দিলীপ কুমার। ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছন পুনে। সেই সময় দিলীপ কুমারের বয়স ১৮ বছর। পুনেতে এক রেস্তোরাঁ কন্ট্রাক্টরের সাথে আলাপ হয় তার , ইংরেজিতে ভাল কথা বলতে পারার কারণে সেখানে কাজ করার সুযোগ পান দিলীপ।
১৯৪২ সালে দীলিপ কুমার বোম্বে টকিজে চিত্র নাট্য ও গল্প লেখার কাজ শুরু করেন। সেই সময় তাঁর নাম ইউসুফ খান। ভালো উর্দু জানার কারণে সহজেই সেখানে কাজ হয়ে যায়। বোম্বে টকিজে কাজ করার সময় ১ হাজার ২৫০ টাকা প্রতি মাসে বেতন পেতেন। সেখানেই অভিনেত্রী দেবিকা রানীর সাথে পরিচয়।
১৯৪৪ সালে দিলীপ কুমারের প্রথম ছবি ‘জোয়ার–ভাটা’। সেই সময় ছবির শুটিং চলার সময় নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করেন অভিনেত্রী দেবিকা রানী। দেবিকা রানী তাকে তিনটে নামের প্রস্তাব দেন —বামন কুমার, উদয় কুমার আর দিলীপ কুমার। শেষটাই পছন্দ হয় তার। সেই থেকে তার পর্দায় নাম দিলীপ কুমার।
দিলীপ কুমার নানা সময়ে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কামিনী কৌশল, বৈজন্তী মালা, মধুবালার মত বিভিন্ন বিখ্যাত অভিনেত্রীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
দিলীপ কুমারের প্রথম স্ত্রীর নাম সায়রা বানু। ১৯৬৬ সালে তিনি তাঁর চেয়ে ২২ বছরের ছোট অভিনেত্রী সায়রা বানুকে বিয়ে করেন তিনি।
পরে আসমা রেহমান কে বিয়ে করেন দ্বিতীয় বার। পরবর্তী সময়ে তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় অভিনেতার। এই সম্পর্ক নিয়ে আজীবন আক্ষেপ ছিল তার। নিজের জীবনী ‘দিলীপ কুমার: দ্য সাবস্টেন্স অ্যান্ড দ্য শ্যাডো’–তে লিখছিলেন এই সম্পর্ক ছিল ‘বড় ভুল’।
পড়ে অবশ্য সায়রা বানুর কাছে ফিরে আসে অভিনেতা। সেই সায়রা বানুর সাথেই জীবনের শেষ পর্যন্ত থাকেন তিনি।