চির ঘুমের দেশে লতা মঙ্গেশকর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২। দীর্ঘদিন ধরে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লতা মঙ্গেশকর সকাল ৮টা বেজে ২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গান স্যালুটে বিদায় জানানো হল গানের সম্রাজ্ঞীকে। লতাজি চিরদিনের মতো এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। ভারতীয় সংগীতের জগতে এক যুগ শেষ হল। তবে মৃত্যুই কি সবকিছুর শেষ ? আর কি কোনও কিছুই থাকে না মৃত্যুর পর? সত্যিই কি পরের জন্ম বলে কিছু আছে এই জানা অজানা পৃথিবীতে ? প্রায়ই এমন প্রশ্ন উঠে থাকে। লতাজি কেও একদিন এমন এক প্রশ্নের সামনা সামনি হতে হয়েছিল। ভারতের ‘নাইটিঙ্গল’ হেসে উত্তর দিয়েছিলেন।
এমনই এক প্রশ্ন করা হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরকে জাভেদ আখতার সঞ্চালিত এক সাক্ষাৎকারে। সুর সম্রাজ্ঞী স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে হেসে বলেছিলেন, “না হি জনম মিলে তো আচ্ছা হ্যায়…।” খানিক থেমে তাঁর সংযোজন, “…আউর অগর ওয়াকেয়ি জনম মিলা মুঝে তো ম্যায় লতা মঙ্গেশকর নহি বননা চাহুঙ্গি। লতা মঙ্গেশকর কি জো তকলিফে হ্যায়, ও উসকো হি পতা হ্যায়।” যার অর্থ হল , “আবার জন্ম না হলেই ভালো। আর যদি পুনর্জন্ম হয়, তাহলে লতা মঙ্গেশকর হিসেবে জন্মগ্রহণ করতে চাই না। লতা মঙ্গেশকরের জীবনে কী সমস্যা রয়েছে তা সে নিজেই জানে।”
ফের হেসে উঠেছিলেন শিল্পী উপরোক্ত মন্তব্য করে। কিন্তু মনে হবে যেন লুকিয়ে ছিল দুঃখের আভাস তাঁর সেই হাসির মধ্যেও। বড় সন্তান ছিলেন সংসারের। বাবাকে হারিয়েছিলেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে। বাড়ির অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব সামলাতে হয়েছিল সেই বয়সেই। লতা মঙ্গেশকর এক হাজারেরও বেশি হিন্দি ছবির গান রেকর্ড করেছেন এবং গান গেয়েছেন ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষায় তাঁর সাত দশক দীর্ঘ কেরিয়ারে। দশকের পর দশক মানুষের মন জয় করে ভারতীয় সংগীতের একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী হয়ে উঠেছেন। তবে এমন দুঃখ কিছু তাঁর মনেও ছিল, যার জন্য আর আকর্ষিত হননি পুনর্জন্মে।