ঘড়িতে সময় দুপুর পৌনে একটা। মুম্বাইয়ের পবনহংস শ্মশানে সাজানো হচ্ছে চিতা। অনন্তের পথে যাত্রা করলেন ডিস্কো কিং। চোখে জল নিয়ে বাবা বাপ্পি লাহিড়ীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করছেন বাপ্পা। কিন্তু মুখাগ্নি করার সময়ে একেবারে ভেঙ্গে পড়লেন তিনি। মন্ত্রোচ্চারণ করতে করতেই কেঁদে ফেললেন তিনি। তাঁকে সান্তনা দিতে এগিয়ে এলেন আশেপাশের সকলে। বাবার দেহের সামনে আগলে রাখলেন বাপ্পাকে। দাদার পাশেই বোন রিমা। রিমাও ধরে রাখতে পারছেন না নিজেকে বাবার মৃতদেহের সামনে দাড়িয়ে। বেলা একটা নাগাদ অনন্তের পথে সঙ্গীত শিল্পীর যাত্রা শুরু হল মুখাগ্নি করে। পঞ্চভূতে বিলীন হল বাপ্পি লাহিড়ীর নশ্বর দেহ। ৬৯ বছর বয়সে সকলকে বিদায় জানালেন বাপ্পি লাহিড়ী। তার শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন শক্তি কাপুর, ইলা অরুণ, অলকা ইয়াগনিক, মিকা সিং, বিন্দু দারা সিং থেকে শুরু করে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেকে।
ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১০টা। থিক থিক করছে অসংখ্য অনুরাগীদের ভীড় জুহুর লাহিড়ি হাউসের সামনে। প্রিয় বাপ্পিদাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু-সহকর্মীরাও জড়ো হয়েছেন। শববাহী গাড়ি ফুলের মালায় সেজে উঠেছে। চারপাশে স্বজন হারানোর আর্তি। কত স্মৃতিরোমন্থন, কত আড্ডা, আজ সবকিছুকে পরপারের কনসার্টের জন্য রওনা হচ্ছেন ‘ডিস্কো কিং’ চিরবিদায় জানিয়ে। প্রিয় ‘বাপ্পিদা’কে চোখের জলে বিদায় দিলেন।
শেষযাত্রা শুরু হল। বাবাকে বাপ্পা শেষযাত্রায় কাঁধ দিলেন। ইতিমধ্যেই আমেরিকা থেকে মুম্বইতে পৌঁছেছেন তিনি স্ত্রীকে নিয়ে। প্রবাদপ্রতীম শিল্পীর দেহ নিয়ে ফুলের চাদরে সাজানো ভিলে পার্লের পবনহংস শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হল শববাহী গাড়ি। ভিলে পার্লের পবনহংস শ্মশানের জুহুর বাড়ি থেকে দূরত্ব আড়াই কিলোমিটার। মাত্র ১০ মিনিট সময় লাগে। সেই পথই এদিন পেরোতে প্রায় একঘণ্টা সময় লাগল। বন্ধু-অনুরাগীরা বাপ্পিদার শেষযাত্রায় পা মেলালেন। শেষকৃত্য সেখানেই সম্পন্ন হল।
করোনা পরবর্তি অসুস্থতায় ভুগছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিলেন মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সেখান থেকে ছাড়া পান সোমবার। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপরই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে। সেখানেই রাত ১১.৪৫ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবাদ প্রতীম সঙ্গীত শিল্পী।