পাড়ার কারখানায় গ্রিলের কাজ করতে এসেছিল ওই যুবক। তার হাত ধরেই বাংলাদেশে পালালো এক নাবালিকা। কিন্তু সীমান্ত টপকে সে এমন পরিস্থিতির শিকার হবে সপ্নেও ভাবেনি। কঠিন পরিস্থিতিতে কেটে যায় তার ৬ মাস। এমনই ঘটল কৃষ্ণনগরে।
জানা গেছে কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ার বাসিন্দা এক দশম শ্রেণীর পাঠরতা ছাত্রীর সাথে বন্ধুত্ব হয় তাদের পাড়ার কারখানায় গ্রিলের কাজ করতে আসা এক যুবকের। যুবকের নাম জানা গেছে মিলন শেখ। আস্তে আস্তে যুবক আর ছাত্রীর বন্ধুত্ব রূপ নেয় প্রণয়ের। কৃষ্ণনগরের মৃণালিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাস টেনের ছাত্রী ওই কিশোরীর যুবকের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে বাড়তে একসময় সে সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে যাওয়ার। সীমান্ত পার হয়ে তারা পৌঁছয় বাংলাদেশে। কিন্তু সীমান্ত টপকাতেই সে পরে এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে। আর সেই বিপত্তিতে একটা দুটো দিন নয়, ভিন দেশে কেটে যায় প্রায় ৯ মাস। শেষ অবধি গত মঙ্গলবার সেই দুর্বিষহ অবস্থার থেকে মুক্তি পায় ওই নাবালিকা।
সূত্রে অনুযায়ী, নদিয়ার কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ার ওই নাবালিকা তাদের এলাকারই একটি গ্রিল কারখানায় কাজ করতে আসা যুবক মিলন শেখের সঙ্গে ২০২১-এর ২৩ জুন পালিয়ে যায়। প্রাথমিক অবশ্য মেয়েটির বাড়ির লোক বুঝতে পারেনি সে কার সাথে গেছে। মেয়েটি আশ্চর্যজনকভাবে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গেলে তাকে পরিবারের লোকজন এদিক ওদিক খুঁজে না পেয়ে অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয়। মেয়েটির মিসিং ডায়েরি করে থানায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই এলাকারই এক গ্রিল মিস্ত্রী মিলন শেখ একদিনের থেকে উধাও। এর পরেই তল্লাশি চালালে পুলিশের হাতে উঠে আসে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ বুঝতে পারে ওই যুবকের সাথে বাংলাদেশে চলে গিয়েছে ওই নাবালিকা কিশোরী। কিন্তু সীমান্ত টপকানোর সময় সে ধরা পরে যায়। তারপর তাঁকে বাংলাদেশের হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গত নয় মাস যাবত সেখানেই ছিল নাবালিকা।
বাড়ির মেয়ের এমন করুণ অবস্থার খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবার। পুলিশ বাংলাদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে, আইনি পথে নাবালিকাকে ভারতে ফেরানোর চেষ্টা শুরু হয়। মঙ্গলবার ভারতের গেঁদের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ফেরানো হয় নাবালিকাকে। তাকে তার অভিবাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ সরকার। ৯ মাস পর নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে পেরে স্বভাবতই আনন্দিত নাবালিকা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে তার পরিবারও।