একাকীত্ব কাটাতে অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট অফিসার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এক মহিলার সাথে বন্ধুত্ব করেছিলেন। ওই নারী বৃদ্ধকে তার কথার জালে জড়িয়ে আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে বৃদ্ধকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেন। সমাজে অপমান আর সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে নিজ কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ফ্লাইট অফিসার। এখন অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ। জানা গেছে, মৃত প্রবীণ একাই থাকতেন এবং ফ্লাইং অফিসার হিসেবে অবসর নিয়েছেন।
ঘটনাটি ইন্দোর শহরের, যাকে মধ্যপ্রদেশের আর্থিক রাজধানী বলা হয়। এখানে, ৬৯ বছর বয়সী বিলাস দলভি, যিনি রাজেন্দ্র নগর থানা এলাকার আইপিএস কলেজে দুই-তিন বছর ধরে স্টোর ম্যানেজার পদে কাজ করছিলেন, তিনি আইপিএস কলেজের এ ব্লকের কোয়ার্টারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ডালভী ফোন রিসিভ করছিলেন না। এতে চিন্তিত হয়ে তার পরিবার কলেজে পৌঁছালে দলভিকে তার ঘরে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ দলভির আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায় তারা ইন্দোরে ছিলেন। জানা গেছে তিনি ফ্লাইং ক্লাবের সদস্য ছিলেন এবং ফ্লাইং অফিসার হিসেবে অবসর নিয়েছেন। অবসর নেওয়ার পর তিনি আইপিএস কলেজে কর্মরত ছিলেন। এখানে একা থাকতেন বিলাস দলভি। পুলিশ দলভির ঘরে তল্লাশি চালালে কোনো সুইসাইড নোট পায়নি। পুলিশ দলভির মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। সেটি পরীক্ষা করতে গিয়ে এক চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসে।
পুলিশ জানায়, দলভি দীর্ঘদিন ধরে একা ছিল এবং কলেজেও একা থাকত। এই একাকীত্ব কাটিয়ে উঠতে ডালভি ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে তার প্রোফাইল তৈরি করেন। যার মাধ্যমে এক নারীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুজনের মধ্যে চ্যাটিংও শুরু হয়।
মহিলা দলভিকে এমনভাবে প্রলুব্ধ করেন যে দুজনেই ভিডিও কলে কথা বলতে শুরু করেন। এই সময় মহিলা দলভির একটি আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে তার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে শুরু করে ব্ল্যাকমেইলিং। বৃদ্ধা তার বন্ধুকে ফোনে এ তথ্য জানিয়েছিলেন। যাতে বেচেঁ থাকতে তার মান-সম্মান নষ্ট না হয়, কেউ যেন তার দিকে আঙুল না তোলে, তাই বৃদ্ধ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
রাজেন্দ্র নগর থানার তদন্তকারী আধিকারিক শচীন ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, জানা গিয়েছে মৃত ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এক মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। আমরা দুজনের মধ্যে কথোপকথন এর তথ্য পেয়েছি। যেখানে মহিলার তরফ থেকে বৃদ্ধকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, শিগগিরই আসামিদের ধরা হবে।
এই সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ট্রেন্ড। মহিলারা সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে। এরপর তার ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে এবং টাকা দাবি করে। অনেকে এসবের শিকার হয়ে টাকা পয়সা দেয়, অনেকে চূড়ান্ত পদক্ষেপও নেয়।