বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে বোল্লা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্য ও মাহাত্ম্য সমৃদ্ধ রক্ষা কালী মাতা মন্দির। এই মাতা বোল্লা কালী মাতা বলেই সুপ্রসিদ্ধ। সেখানে প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছেন মা রক্ষাকালী,যাকে আমরা বোল্লা কালী বলে চিনি। খানিক পেছনে তাকালে বোঝা যাবে ,এই পুজোর ইতিহাস ভারতের ইতিহাসের সাথেও জড়িত।
রাসপূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবারে মায়ের বাৎসরিক পুজো অনুষ্ঠিত হয় ও সোমবারে মায়ের বিসর্জন হয়। এই কয়েকদিন যাবত মায়ের পুজোকে ঘিরে বিশাল মেলা হয়। এছাড়াও প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও মঙ্গলবারে মায়ের পুজো হয়।
কথিত আছে, জনৈক এক ব্যক্তি মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুকুর থেকে মায়ের শিলাময় রূপটি উদ্ধার করেন ও প্রতিষ্ঠা করে নিত্য পূজা শুরু করেন। এই সময়ে মাকে ‘মরকা কালী’ বলে অভিহিত করা হত। প্রতি জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় হত মায়ের বিশেষ পূজা। পরবর্তীকালে জমিদার বল্লভ চৌধুরী নাম অনুসারে সেই গ্রামের নাম হয় ‘বোল্লা’। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে, গ্রামের জমিদার মুরারী মোহন চৌধুরীই নিয়মিত মায়ের সেবায় নিমগ্ন হন।
এরপর জমিদার মুরারী মোহন চৌধুরি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে যান। তারপর তিনি বোল্লা মায়ের কাছে মানত করে, সেই মামলায় জয় লাভ করেন। দেবী কালি তার উদ্ধারের জন্য এসেছিলেন এবং পরবর্তী দিনই জমিদার মুক্তি পেয়েছিলেন। কৃতজ্ঞতার প্রতীক হিসাবে তিনি দেবী কালির একটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। সেই বছর থেকে রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার ঘটা করে পুজোর আয়োজন শুরু হয়।