দুর্গাপুজোর মাহাত্ম্য শুধু বাঙালির গণ্ডির মধ্যেই আবদ্ধ নয়, অবাঙালিদের কাছেও এর গুরুত্ব রয়েছে। কারণ বাঙালি যে সময় দুর্গাপুজো নিয়ে মেতে ওঠে, ঠিক সেই সময়ই অবাঙালিরা নবরাত্রি (navratri)নিয়ে মেতে ওঠেন।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী পার্বতীর নয়টি ভিন্ন রূপ। দেবী পার্বতীর দুর্গার রূপের নয়টি রূপকে বোঝানো হয় ৷ নয় রূপ হল যথাক্রমে – শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী ৷ কৃষ্ণপক্ষের অবসানের পর সূচনা হয় দেবীপক্ষের। শুক্লপক্ষের প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত ন’টি রাত্রি পর্যন্ত দুর্গার নয়টি রূপের পুজো করা হয়ে থাকে। প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয় রাত্রি ধরে দুর্গার নয়টি শক্তির যে পুজো হয় তাকেই নবরাত্রি বলে। আসলে এই নয়টি রূপের সগুন বর্তমান দেবী পার্বতীর দুর্গা রূপ। যেই রূপে দেবী পার্বতী বধ করেন দুর্গম অসুরকে। শরৎকালে এই উত্সব হয় বলে একে শারদ নবরাত্রিও বলা হয়ে থাকে। দশমীতে শেষ হয় এই পুজো।
প্রতিপদায় শৈলপুত্রী- নবরাত্রির প্রথম দিনে শৈলপুত্রী স্বরূপে পূজিত হন দুর্গা। পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যা তিনি। শৈলপুত্রীর উপাসনা করলে সুখ ও সিদ্ধি লাভ হয়।
দ্বিতীয়ায় ব্রহ্মচারিণী- মনে করা হয়, শিবকে স্বামী রূপে পাওয়ার জন্য ইনি কঠিন তপ করেছিলেন। ব্রহ্মচারিণীর উপাসনার ফলে যশ ও সিদ্ধি লাভ হয়।
তৃতীয়ায় চন্দ্রঘণ্টা- বাঘের পিঠে সওয়ার চন্দ্রঘণ্টার উপাসনা করলে সমস্ত সমস্যা ও মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব হয়।
চতুর্থীতে কূষ্মাণ্ডা- এদিন কূষ্মাণ্ডার আরাধনা করলে আয়ু ও যশ বৃদ্ধি হয়।
পঞ্চমীতে স্কন্দমাতা- কার্তিকেয় অর্থাৎ স্কন্দের মা হওয়ার সুবাদে দুর্গার পঞ্চম স্বরূপ স্কন্দমাতা নামে প্রসিদ্ধ। স্কন্দমাতাকে প্রসন্ন করলে সন্তান-সুখ আরোগ্য ও জ্ঞান লাভ হয়।
ষষ্ঠীতে কাত্যায়নী- মনে করা হয়, যে মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে না, তাঁরা দুর্গার এই রূপের পুজো করলে বিবাহের পথে আগত বাধা দূর হয়।
সপ্তমীতে কালরাত্রি- এদিন কালরাত্রি স্বরূপের পুজো করলে কাল ও শত্রু নাশ হয়।
অষ্টমীতে মহাগৌরী- সুখ-সৌভাগ্য লাভের জন্য অষ্টমীর দিন দুর্গা মহাগৌরী রূপে পূজিত হন।
নবমীতে সিদ্ধিদাত্রী- আটকে থাকা কাজ পুরো করা ও সিদ্ধি লাভের জন্য নবরাত্রির শেষ দিনে সিদ্ধিদাত্রীর পুজো করা হয়।