নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্রের ছবি শুক্রবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যেখানে কয়েকজন তালিবান জঙ্গিদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে ছবি তুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কল্যাণীর ওই যুবকের শফিউল্লাহ নাম। ‘শফি-ভাই’ নামে কল্যানী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পরিচিত। পাশাপাশি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ছবি শেয়ার করেছে শফিউল্লাহ, যেখানে তালিবান দ্বারা দায়িত্ব প্রাপ্ত কাপিসা প্রদেশের কৃষি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে আলোচনায় মগ্ন হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আর তার এই ছবি দেখেই তার পরিচিত বন্ধু বান্ধব থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও উদ্বিঘ্ন।
কারণও রয়েছে যথেষ্ট আঁতকে ওঠার। ছবির ক্যাপশন বলছে, তিনি তালিবান নয়া জমানায় আফগানিস্তানের কাপিসা প্রদেশের কৃষি বিভাগের প্রধান হজরত মোলাভির সঙ্গে আলোচনা করছেন।
শফির পরিচিতেরা এটা ভেবে উদ্বিগ্ন, যিনি প্রকৃতি ভালবাসতেন, যিনি গাছের চারা নিয়ে গিয়েছিলেন আফগানিস্তানে এখান থেকে, তিনি এখন কেমন আছেন পালাবদলের রক্তাক্ত দেশে! যখন সেই দেশে তিনি গিয়েছিলেন তখন কাবুলিওয়ালাদের দেশে তালিবানের শাসন ছিল না। আর সেই যুবক এখন কী করছে তালিবানদের মধ্যে সেটা দেখেই অবাক লাগছে।
পরিচিতেরা জানাচ্ছেন, শফি প্রায়ই বলতেন, এক দিকে নেটো, অন্য দিকে তালিবান— এই দু’য়ের মাঝে পড়ে সাধারণ আফগানবাসীর নাজেহাল অবস্থা। সেই আবেগপ্রবণ যুবক কি তবে তালিবানি জমানায় চাপের মুখে বদলে ফেললেন নিজেকে!
যদিও বৃহস্পতিবার রাতে শফিউল্লাহ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে একটি বার্তা দিয়েছে আত্মীয় সজন এবং সবার জন্য। একটি পোস্টে সকলকে শফিউল্লাহ আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, তিনি যুক্ত নন কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে। এক কর্মী মাত্র আফগানিস্তান সরকারের। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘ কর্মী বদল হচ্ছে বিভিন্ন দফতরে। সেই সূত্রেই আমার প্রদেশের নতুন কৃষি আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেছি।’
তাঁর এমন ছবি নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিকাশচন্দ্র সিংহ মহাপাত্র জানালেন, ২০১৮-র জুলাই থেকে ২০২০-র জুলাই পর্যন্ত শফিউল্লাহ এখানে পড়েছেন। আফগানিস্তানের কৃষি দফতরে, শফি ভারতে পড়তে আসার আগে কর্মরত ছিল উপাচার্য জানান। এদেশে উচ্চশিক্ষা লাভের আশায় এসেছিল সে। দেশে ফিরে আশরফ গনি সরকারের কৃষি দফতরের উচ্চপদে যোগ দেন ।