নিশ্চিত হল কাবুলের পতন। মার্কিন সেনা সরতেই আফগানিস্তানের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল তালিবানরা। তারা এখন দলে দলে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করছে বলে খবর। কার্যত বলাই যায় আফগানিস্তানে আবারও শুরু তালিবান যুগ।
সূত্রে জানা গেছে প্রায় বিনা মোকাবিলায় তালিবানদের হাতে দেশের ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। আশরফ গনির জায়গায় আফগানিস্তানের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তালিবানের প্রধান আবদুল গনি বরাদর। এই যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে আগেই ভারতীয় নাগরিকদের আফগানিস্তান ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ভারত সরকার। আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল একের পর এক দূতাবাস থেকে সেই দেশে বসবাসকারী সরকারী মুখপাত্র , কুটনীতিক এবং কর্মীদের ফেরানোর কাজ। আজ কাবুলের পতন হতেই বাকি ১২৬ জন সওয়ারি নিয়ে কাবুল ছাড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার শেষ বিমান।
দেশের দুটি বড় শহর বিনা বাধায় দখল নিয়ে নেওয়ার পর কাবুলে ঢোকা ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা। আজ রবিবার দুপুরেই তালিবান বাহিনী কাবুলে ঢুকতে শুরু করেছিল। ময়দান ওয়ারদাকের আধিপত্য নেওয়ার পর দ্রুত গতিতে কাবুলের সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছিল তালিবান। আতঙ্কে শহরের লোকজনের অনেকেই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। যদিও এর মধ্যেই আফগানিস্তানের সমস্ত বর্ডার ক্রসিংয়ের দখলও তালিবানের হাতে চলে এসেছিল। শুধুমাত্র একটাই সেই দেশ ছেড়ে বেরিয়ে আসার একটাই পথ আছে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেই পথ ব্যবহার করেই কূটনীতিকরা আফগানিস্তান ছাড়ছেন দ্রুত গতিতে। ভারত, ব্রিটেন ইত্যাদি দেশের পাশাপাশি মার্কিন দূতাবাসও দ্রুত খালি করার কাজ হচ্ছে।
তালিবানরা আগেই জানিয়েছিল করেছে তারা ঘন জনবসতিপূর্ণ কাবুলে রক্তক্ষয় চায় না। বিনা যুদ্ধেই দেশের ক্ষমতার হস্তান্তর চায় তারা। আজ সকালের পরই মাত্র ৪৫ মিনিট তালিবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিলেন আশরফ গনি। এমন পরিস্থিতিতে আফগান সরকারি অফিসগুলি থেকে সরকারি কর্মচারীরা পালাতে শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রতিটি ব্যাঙ্কে ব্যস্ততা চরমে, টাকা তোলার লম্বা লাইন কারণ মানুষ তাদের সঞ্চিত টাকা তুলে নিতে ভিড় জমিয়েছেন। বহু দোকান বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। কবুল ছেড়ে অনেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে ফলে শহরে তৈরী হয়েছে তীব্র যানজট।আফগান নাগরিকদের সেই দেশ ছেড়ে পালানোর তীব্র চেষ্টা নজরে পড়েছে। সেই সব ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। তালিবানের কাছে বহু স্থানে আফগান কমান্ডাররা আত্মসমর্পণ করেছে বলেও জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে আফগানিস্তানে আবারও একবার তালিবানি শাসন জারি হওয়াটা কার্যত সময়ের অপেক্ষা।