স্বামী অপরাধ করে জেলের সাজা খাটছেন। স্বামীর সংসর্গে না থাকায় মা হবার সাধ পূরণ হচ্ছে না স্ত্রী। কিন্তু গর্ভবতী হতে চান তিনি। বিবাহের পরে সেটা তো তার মৌলিক অধিকারও। তাই গর্ভবতী হতে চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করলেন স্ত্রী। এই অভিনব আবেদন পেয়ে আদালত পড়ল বেশ সমস্যায়। আদালত অপরাধ প্রমাণ হয়ে শাস্তি পেয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাকে নিশ্চয়ই ছেড়ে দেওয়া যায় না। আবার এদিকে বিয়ের পর স্বামীর গর্ভধারণ মহিলার অধিকার। তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিতও বা করা যায় কিভাবে। কেননা আদালতের কাজই তো হচ্ছে মানুষ কে ন্যায় দেওয়া, অধিকার পূরণ করা। অবশেষে এক চমকপ্রদ রায় দিল যোধপুর হাই কোর্ট (Jodhpur High Court)। স্ত্রীকে গর্ভবতী করার জন্য প্যারোলে ওই আসামিকে ১৫ দিনের জন্য মুক্তি দিল আদালত। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সারাদেশে।
জানা গেছে জেলবন্দি আসামির নাম নন্দলাল। একটি খুনের ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অপরাধে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় রাজস্থানের ভিলওয়াড়া আদালত। গত কয়েক বছর ধরেই জেল খাটছেন তিনি। কিছুদিন আগে তার স্ত্রী রেখা আবেদন নিয়ে দ্বারস্থ হন যোধপুর উচ্চ আদালতের। নিজের আবেদনে জানান তার মা হওয়ার ইচ্ছা। একজন মহিলার অধিকার আছে মা হওয়ার। কিন্তু স্বামী তার সঙ্গে না থেকে জেলে থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। তাই আদালতের কাছে বিচার চাইলেন তিনি। তার আবেদন খতিয়ে দেখে যোধপুর আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি সন্দীপ মেহেতা (Sandeep Mehta) এবং ফারজাদ আলি জানিয়েছে মা হওয়া যেকোনো নারীরই প্রাথমিক অধিকার। কিন্তু স্বামী নন্দলাল জেলে থাকার কারণে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তার স্ত্রী যে কোনো অপরাধ করেননি। তাই আদালত মহিলার দাবিকে মান্যতা দেয়।
তাছাড়া ভারতের সংবিধান ‘বংশরক্ষার অধিকার’কে মান্যতা দেয়। এই রায় দেওয়ার সময় বিচারপতিরা হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন ইত্যাদি ধর্মের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন যে সব ধর্মেই বংশরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই ওই মহিলাকেও বংশ বাড়ানোর অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়নি যোধপুর হাই কোর্ট। প্রসঙ্গত অভিব্যক্তি এর আগেও একবার প্যারোলে ২০ দিনের জন্য মুক্তি পেয়েছিল। সেই সময় তার ভালো আচরণের জন্য এবং সময়ে আবারও আত্মসমর্পণ করায় আবারও তার প্যারোল মঞ্জুর করলো আদালত।