নিরপত্তার অভাবে সোনার গয়না প্রায় বার করা হয়না বললেই চলে। বাড়ির আলমারির লকারেই জমা হয়ে থাকে বেশিরভাগ সোনার গয়না! এদিক ওদিক যেতে কাজ চালাতে হালকা গয়না অথবা নকল গিল্টি গয়না বা সিটি গোল্ডই ভরসা। ভারী গয়না বানালেও নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকেই সেই গয়না গায়ে তোলেন না। দীর্ঘ সময় ধরে তা পড়ে থাকে বাড়ির আলমারি অথবা ব্যাঙ্কের লকারের ভেতরেই। ভারী সোনার গয়না যেন বাড়ী বা ব্যাঙ্কের লকারে রেখেও নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না। তা নিয়ে চিন্তা যেন থাকেই। যদি গয়না আলমারিতে থাকে তাহলে সব সময় তারা করে বেড়ায় চুরি, ডাকাতির ভয় আবার ব্যাঙ্কের লকার ভাড়া করে সোনার গয়না রাখলে তার জন্য বেশ মোটা টাকার ভাড়াই গুনতে হয়। ইত্যাদি নানা সমস্যা সমাধানে কাজে আসতে পারে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার এই বিশেষ প্রকল্প। এই প্রকল্পে আপনার সোনাও থাকবে সুরক্ষিত আর নিরাপত্তাজনিত ভয় অথবা ঝুঁকি কোনওটাই থাকবে না। এমনই এক প্রকল্প এটি।
এই প্রকল্পটি মুলত কেন্দ্রীয় সরকারের। সোনা নগদীকরণের উদ্দেশ্যে দেশের সর্বোত্তম ব্যাঙ্কের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের। দেশের মানুষের কাছে বাড়িতে পরে থাকা গচ্ছিত থাকা সোনা যাতে বিনিয়োগের কাজে ব্যাবহার করা যায় সেই লক্ষ্যেই এই প্রকল্প। স্টেট ব্যাঙ্কের এই প্রকল্পটির নাম ‘রিভ্যাম্পড গোল্ড ডিপোজিট স্কিম’। এক কথায় একে বলা হয় ‘আর-জিডিএস’। এই প্রকল্পে সল্প সময়ের জন্য, মধ্য সময়ের জন্য আর দীর্ঘ মেয়াদী হারে, এই তিন ভাবে এই প্রকল্পে সোনা বিনিয়োগ করা যায়। তিন ধরনের সময়ের প্রকল্পে আলাদা আলাদা হারে সুদ মেলে বার্ষিক ভিত্তিতে।
১ থেকে ৩ বছরের জন্য স্বল্প সময়ের জন্য বিনিয়োগ, মধ্যমেয়াদি বিনিয়োগের সময়সীমা ৫ থেকে ৭ বছরের জন্য এবং ১২ থেকে ১৫ বছরের জন্য করা যেতে পারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। তবে এর বাইরেও ভাঙা বছরের জন্যও সোনার গয়না বিনিয়োগ করা যেতে পারে। যদিও সেই বিনোয়গে সুদের রকমফের হয়। এই প্রকল্পে সর্বনিন্ম ১০ গ্রাম সোনা বিনিয়োগ করা যায়। তবে সোনার গয়নায় কোনো রকম কোনও স্টোন বসানো হলে সেটিকে এর মধ্যে ধরা হয় না। বিনিয়োগের কোনও উর্দ্ধসীমা নেই। যিনি এই সোনার গয়নাবিনিয়োগ করবেন তিনি অন্য কাউকে এর নমিনি করে রাখতে পারেন।
স্বল্পকালীন বিনিয়োগে এক বছরের জন্য সুদ পাওয়া যাবে ০.০৫ শতাংশ। দু’বছরের জন্য ০.৫৫ শতাংশ আর তিন বছরের জন্য বিনিয়োগ করলে ০.৬০ শতাংশ হারে সুদ মেলে। মধ্যমেয়াদি স্বর্ন বিনিয়োগে সুদের হার বছরে ২.২৫ আর দীর্ঘমেয়াদিকালীন সোনার ক্ষেত্রে ২.৫০ শতাংশ।
নিয়ম অনুযায়ী এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার সময় সোনার যে বাজার দর চলছে সেই অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে বিনিয়োগের মোট পরিমাণ। সেই নির্ধারিত মূল্যের উপরেই মিলবে সুদ। প্রতি ৩১ মার্চ তারিখে আর্থিক বছর শেষ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সোনার বিনিয়োগের সুদ জমা পড়বে। গ্রাহক ইচ্ছানুযায়ী মিলতে পারে সরল সুদ বা সমষ্টিগত সুদ। কিন্তু কোন উপায়ে সুদ নেবেন সেটা বিনিয়োগের সময়েই জানাতে হবে।