মোবাইলে গেমের নেশা (Mobile Game Addiction) যে কতোটা ক্ষতিকর সেটা আবারও সামনে এল ইন্দোরের একটি মর্মান্তিক ঘটনায়। মোবাইল গেম খেলে টাকা ইনকাম করার রঙিন স্বপ্ন দেখেছিল বছর ২৫ এর এক যুবক। কিন্তু সেই টাকা উপার্জনের নেশায় মাথায় চাপলো বিশাল অঙ্কের দেনা। দেনার দায়ে শেষ অবধি আত্মহননের পথ বেছে নিল এই ছাত্র। পুলিশ তার দেহ উদ্ধার করে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
ঘটনাটা আসলে কী? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দোরের ইন্দ্রপুরী হস্টেলে থাকতেন ২৫ বছরের জিতেন্দ্র ভাস্কলে। ছাত্র জিতেন্দ্র ভাস্কল পাঁচ বছর আগে ইন্দোরে এসেছিলেন।কিন্তু পড়াশোনার জায়াগায় সারাদিন অনলাইন গেম খেলায় মত্ত থাকতেন তিনি। ভেবেছিলেন অনলাইন থ্রি কার্ড গেম খেলে টাকা উপার্জনের ফাঁদে পা দেন তিনি। এরপরই শুরু হয় সমস্যা। অনলাইন গেমে টাকা জমা করতে চেনা পরিচিত , আত্মীয় পরিজন সকলের থেকেই টাকা পয়সা দেনা করতে শুরু করে জিতেন্দ্র। এভাবেই আস্তে আস্তে মাথায় চেপে বসে বিশাল অঙ্কের দেনা। কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে সে। আত্মহত্যা করার আগে সে তার বোনকে মেসেজ করে জানায়। পরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পরে। বোন তার রুমমেটকে জানালে বন্ধুরা পৌঁছয়। পৌঁছে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই ছাত্রের কাছ থেকে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে। জানা গিয়েছে সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন …
আই অ্যাম সরি মা, আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি এবং আমি দুঃখিত যে আমি বাড়িতে আসার বা অন্য কোথাও যাওয়ার পরিস্থিতিতে নেই। ঘরের অবস্থা দেখলে আমার সহ্য হয় না। আমি গেলে কোথায় যাব? না বাড়ি, না জমি আছে। যা ছিল তা সবই লোকজন নিয়ে গেছে। আমি আমার পরিবার এবং বন্ধুদের খুব ভালোবাসি… টাকার লোভে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছি। আমি ভেবেছিলাম অনলাইন গেম খেলে টাকা জিতব এবং আমার বাবা-মায়ের জন্য একটি নতুন বাড়ি বানিয়ে দেবো, এবং নিজের ভরণ-পোষণের জন্য কিছু জমি কিনে নেবো, কিন্তু আমি টাকা জিততে পারিনি… আমি আমার বোনদের খুব ভালোবাসি।
পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্র জিতেন্দ্র ভাস্কল পাঁচ বছর আগে ইন্দোরে এসেছিলেন। তিনি ভানওয়ারকুয়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি খারগোন জেলার বাসিন্দা ছিলেন। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন বন্ধুও থাকত। নিহত ব্যক্তি বিএ ও পিজিডিসিতে পড়াশুনার পাশাপাশি নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জানা গিয়েছে তিনি প্রায় এক বছর ধরে অনলাইন গেম খেলছিলেন।