অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে দুদিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক বিবাহিত মহিলাকে তার প্রেমিকের সঙ্গে নেলোরে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এই মহিলা নিখোঁজ হওয়ার পর সাগরে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনার কারণে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড প্রায় ৩৬ ঘন্টা তার অনুসন্ধান অভিযান চালায় এবং অনুসন্ধানে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় করে। নিখোঁজ তরুণীর সন্ধানে একটি হেলিকপ্টার ও তিনটি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছিল।
২৩ বছর বয়সী বিবাহিত ওই বধূ সোমবার তার স্বামীর সাথে তার বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করতে বিশাখাপত্তনমের আরকে বিচে গিয়েছিলেন। এই সময়, দম্পতি প্রথমে সিমাচলম মন্দিরে যান এবং সেখান থেকে সমুদ্র সৈকতে আসেন। তারপর দুজনেই সমুদ্রের তীরে তাদের মোবাইল থেকে ফটো ক্লিক করে এবং কিছু ভিডিও রেকর্ডও করে।
এর মধ্যে স্বামীর মোবাইলে কারো কল এলে তিনি কথাবার্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এসময় তার স্ত্রী মোবাইল থেকে সেলফি তুলতে থাকেন। এরপর স্বামীর কথোপকথন শেষ হলে স্ত্রীকে এদিক-ওদিক দেখতে পান না। না দেখতে পেয়ে তাকে জোরে জোরে ডাকতে থাকেন, কিন্তু তাতে কোনো সারা আসেনি। এর পরে, দিশেহারা স্বামী স্ত্রীর সন্ধানের জন্য স্থানীয় থ্রি টাউন থানায় মিসিং ডায়েরি করেন এবং তার পরিবারের সদস্যসহ শ্বশুরবাড়িতেও বিষয়টি জানান।
পুলিশ আশঙ্কা করে সাগরের ঢেউয়ের কবলে পড়ে থাকতে পারে ওই বধূ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তা নেয় পুলিশ। একই সঙ্গে সাগরে তল্লাশি চালাতে মৎস্যজীবী ও ডুবুরিরা অভিযান চালায়। সমুদ্র সৈকত থেকে নিখোঁজ মেয়েটিকে খুঁজে পেতে নৌবাহিনী ৩টি জাহাজ এবং একটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করে দেয়। তবে নিখোঁজের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও নৌবাহিনীর ক্রমাগত তল্লাশি অভিযানের মধ্যে হঠাৎ করেই এই কাহিনীতে নতুন মোড় এল। আসলে, ওই মহিলা একটি টেক্সট বার্তার মাধ্যমে তার মাকে তার অবস্থান সম্পর্কে জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি তার প্রেমিকের সাথে নেলোরে (অন্ধ্রপ্রদেশ) পালিয়ে গেছেন। সেই সঙ্গে প্রেমিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য পরিবারের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।
পরিদর্শক কে. রামা রাও জানিয়েছেন, মেয়েটি নিজেই তার অবস্থান সম্পর্কে জানিয়েছে এবং বলেছে যে সে নিরাপদ এবং বর্তমানে নেলোরে রয়েছে। এটা যাচাই করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, ‘নিখোঁজ মেয়ে’র সন্ধানে তিনটি নৌ জাহাজ এবং একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছিল। অনুসন্ধান অভিযানের আনুমানিক ব্যয় প্রায় ১ কোটি টাকা, কারণ অভিযানটি দুই দিনের বেশি সময় ধরে চলেছিল।
বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা এই মেয়েটির ২০২০ সালে শ্রীকাকুলামের বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। তিনি বর্তমানে অধ্যয়নরত এবং তার স্বামী হায়দ্রাবাদের একটি ফার্মেসি কোম্পানিতে কর্মচারী। সোমবার, দম্পতি দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করতে সিংহচলম মন্দিরে এবং সেখান থেকে সমুদ্র সৈকতে গিয়েছিলেন। তারপর এই ঘটনা।