জবলপুরের এই খবরে স্তম্ভিত সকলে। সারা জীবন কত কষ্ট করে মা-বাবা সন্তানকে মানুষ করেন। কিন্তু সেই মা বাবাকেই যদি মৃত্যুর পর দাহ করার সময় সন্তানদের দেখা না মেলে বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? ঠিক এমনটাই হয়েছে জবলপুরের, যেখানে সন্তান থাকা সত্ত্বেও মায়ের শেষকৃত্য করতে হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানকে। যে মায়ের ৩ মেয়ে আর ১ ছেলে আছে, তিনি কি জীবনে একবারও ভেবেছিলেন যে মৃত্যুর পর তাকে অন্যের হাতে দাহ হতে হবে। কিন্তু এই ঘটনার পর মনে হচ্ছে সব কিছুই সম্ভব।
মায়ের মরদেহ রেখে চুপচাপ পাঞ্জাব চলে গেল মেয়ে
অসুস্থ মায়ের মৃত্যুর পর মেয়ে মাকে ছেড়ে পাঞ্জাবে শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। মেয়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, দেহ পাঞ্জাবে এনে দাহ করতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে, তাই মাকে হাসপাতালে রেখে এসেছেন। তিনি বলেন, এই খরচ এড়াতে একাই পাঞ্জাব চলে এসেছি।
মায়ের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে মাকে মেয়ে জবলপুরের আর্মি হাসপাতালে ভর্তি করায়। কারণ তার বাবা একজন প্রাক্তন সেনা সদস্য ছিলেন, হাসপাতালে একাধিক পরীক্ষা করার পর জানা যায় ওই মহিলা যার নাম রুকমণি তার গ্যাংগ্রিন হয়েছে যার চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয়। এরপর মেয়ে পুনম মাকে জবলপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর পুনম তার মায়ের লাশ ফেলে চুপচাপ তার শ্বশুরবাড়ি পাঞ্জাবে ফিরে আসেন।
হাসপাতালের লোকজন জানান, ম্যানেজমেন্ট যখন রেকর্ড খতিয়ে দেখে, তখন রুকমণির মেয়ে পুনম কৌরের নম্বর পাওয়া যায়। ওই নম্বরে ফোন করে মেয়েকে শেষকৃত্যের জন্য জব্বলপুরে আসতে বলা হলে মেয়ে বলেন, মৃতদেহ পাঞ্জাবে নিয়ে যেতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে, তাই মায়ের লাশ রেখে তিনি একা পাঞ্জাবে এসেছেন।
তিনি নিজে আসতে অস্বীকৃতি জানান, অন্যান্য আত্মীয়দের নম্বর দিয়ে দেব, অন্য আত্মীয়রাও আসতে নারাজ, তাই জবলপুরের গরীব নওয়াজ সংস্থার ইনায়েত আলিকে ডাকা হয়েছিল। এরপর তিনিই দায়িত্ত্ব নিয়ে হিন্দু রীতি অনুযায়ী মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।