যুগ যতই এগিয়ে যাক আজও সমাজে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে পার্থক্য করার মধ্যযুগীয় মানসিকতা কোন কোন ক্ষেত্রে রয়ে গেছে যে তা এই ঘটনায় আবারো সামনে এল। বাড়ির বউ ছিলেন গর্ভবতী। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন আশা করেছিল পুত্র সন্তানের ই। তাই মহিলা কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়া মাত্র ক্ষেপে উঠলেন তারা।
মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসে (MP Devas) একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূকে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা লোহার রড গরম করে তাই আঘাত করেছে বলে অভিযোগ এসেছে। জানা গিয়েছে গরম লোহার রড দিয়ে তার সারা শরীরে ছাক্যা দেওয়া হয়েছে। ওই গৃহবধূ তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানালে তারা বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সোমবার এক পুলিশ কর্মকর্তা এই বিষয়ে তথ্য মিডিয়ার সামনে এনেছে।
বর্বরোচিত এই ঘটনা প্রসঙ্গে বরোথা থানার ইনচার্জ শৈলেন্দ্র মুকাতি জানান, ঘটনাটি গত ১৬ই মার্চের। গত ১৬ই মার্চ দেওয়াস জেলার নারিয়াখেদা গ্রামে ২২ বছর বয়সী এক মহিলা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাদের ঘরে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হওয়ায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুশি ছিলেন না। সদ্য প্রসূতা ওই নারীর ওপর নির্যাতন শুরু করে দেয় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তারা গরম লোহার রড দিয়ে মহিলার শরীরে আঘাত করে। এতে ওই গৃহবধূ গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে যে মহিলার বাবা-মা তাদের মেয়ের উপর করা নির্যাতনের কথা জানতে পেরেছিলেন যখন তারা ইন্দোরের তার নিজ গ্রাম তিল্লোর থেকে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাকে দেখতে আসেন। সদ্য সন্তানের জন্ম দেওয়া মেয়ের এমন করুণ অবস্থা দেখে তারা তৎক্ষণাৎ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রোববার ওই নারীর স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির পাঁচ আত্মীয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে IPC-এর ধারা 498-A (স্বামী বা মহিলার স্বামীর আত্মীয়ের দ্বারা নিষ্ঠুরতা) 506 (অপরাধমূলক ভয় দেখানো) 323 (আঘাত ঘটানো) ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে। ওই নারীর স্বামী বাবলু ঢালা, শ্বশুর ভেরু ঢালা, শাশুড়ি মঞ্জু ঢালা, দেওর অঙ্কিত ঢালা ও অঙ্কিতের স্ত্রী কাজলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করছে।