যত রাতই হোক না কেন কোনো অসুবিধে নেই কিন্তু সকালে যেন কিছুতেই দুচোখের পাতা খুলতে চায় না। কী সমস্যা। আজকালকার স্মার্ট ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে রাতে অনেকক্ষণ ধরে জেগে সকালবেলা সময় ওঠা সত্যি চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।
দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া এবং দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার নিত্য নৈমত্তিক অভ্যাস আমাদের স্বাস্থের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই অভ্যাসের কারণে অনেক অসুবিধে হতে পারে। বাড়ে অল্প বয়সে মৃত্যুর ঝুঁকি। ক্রোনোবায়োলজি ইন্টারন্যাশনাল এর জার্নালে প্রকাশিত একটি রিসার্চ পেপার থেকে জানা যায়, যেসব মানুষ নিয়মিত ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠেন তাদের গড় আয়ু দেরি করে ওঠা মানুষজনের তুলনায় অন্তত ছয় থেকে সাত বছর বেশি হয়।
এছাড়া রোজ রোজ অনেক দেরিতে ঘুমালে চোখে মুখে তার ছাপ পড়তে বাধ্য এদিকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকালে উঠলে চেহারা ও মন ভালো থাকে। তাহলে কি করণীয়। রইল টিপস!
১) রোজকার একটি ‘ডেইলি রুটিন’ বানান। নিত্যনৈমিত্তিক যে কাজ করতে হয় তার জন্য কতটা সময় প্রয়োজন, তাও স্থির করুন। এই বানানো ‘ডেইলি রুটিন’ চার্ট সারাদিন মেনে চলুন। অবশ্যই অবশ্যই রাতে ঘুমের জন্যে ৭-৮ ঘণ্টা বরাদ্দ রাখবেন।
২) রাত জেগে টিভি অথবা ল্যাপটপে ওয়েব সিরিজ দেখাl, সোশ্যাল মিডিয়া ঘাটা ইত্যাদি অভ্যাস বাদ দিতে হবে। এমনকি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি স্ক্রল করতে করতে সময় চলে গিয়ে লেট নাইট করার ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।
৩) মনে রাখবেন একদিনে হবে না কিন্তু আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কিছুটা সময় তো লাগবে। তাই ছোট ছোট পদক্ষেপ নিন। প্রথম দিন আপনি যে সময়ে অন্যান্য দিন ঘুমোতে যান তার চেয়ে ১৫ মিনিট পূর্বে ঘুমাতে যান আর ১৫ মিনিট আগে ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। একই ভাবে পরদিন সময়ের ৩০ মিনিট আগে ঘুমান। এভাবে আস্তে আস্তে ঘুমোনোর সময় আর ওঠার সময় এগিয়ে আনুন।
৪) আপনার শোয়ার ঘরের পরিবেশ কেমন থাকছে ঘুমনোর সময় সেটিও ঘুম আসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি আপনার শোয়ার ঘরটি পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকে, ঘুমনোর সময় অন্ধকার থাকে, আর ঠান্ডা থাকে তাহলে আপনার মন শান্ত হবে এবং দ্রুত ঘুম চলে আসবে।
৫) সুস্থ শরীরে দুপুরের ঘুম এড়িয়ে চলুন। যদি ডাক্তারের কোনো পরামর্শ না থাকে দুপুরে বিশ্রাম করার তাহলে দুপুরে ঘুমাবেন না। কারণ দুপুরের ঘুমোলে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসতে চায় না এবং সকালে ওঠতেও দেরি হয়। তাই দুপুরের ঘুমকে এড়িয়ে যাওয়াই শরীরের জন্যে ভালো। যদি দুপুরে ফাঁকা থাকেন তাহলে কোনো নতুন কিছু করুন, শখের কাজ শিখুন ইত্যাদি।
৬) নতুন অভ্যাসে প্রথম কদিন ব্যর্থ হলেই চিন্তিত হবেন না। ক্রমাগত চেষ্টাতেই আসবে সাফল্য। আপনার শরীর হয়তো নির্দিষ্ট ঘুমের সময়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, নতুন ভাবে অভ্যাস তৈরি করতে কিছুটা সময়তো লাগবেই। তাই হাল ছাড়বেন না।