স্বয়ং যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা টলিউড অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী করোনা টিকা নিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন! এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর বুধবার থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার টিকা নিয়েছিলেন মিমি কসবার এক ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে হাজির হয়ে, পরবর্তীতে সাংসদের খটকা লাগায় তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন সম্পূর্ণ জাল ওই টিকা ক্যাম্প। এরপর গোটা চক্রের মূল পাণ্ডা দেবাঞ্জন দেব সাংসদের তত্পরতাতেই গ্রেফতার হন।
করোনার টিকা কসবার টিকাকরণ কেন্দ্রে দেওয়া হয়নি, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে প্রাথমিক তদন্তে। জানা গিয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট, এক্সপায়ারি ডেট টিকার কোনও ভায়ালেই ছিল না। ব্যাচ নম্বরও গায়েব। প্রাথমিকভাবে পাউডারের সঙ্গে জল মেশানো তরল পদার্থকে মনে করা হচ্ছে মিমি ও অন্যদের দেওয়া হয়েছিল কোভিশিল্ড হিসাবে। ইতিমধ্যেই পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে ওই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে বাজেয়াপ্ত টিকা। রিপোর্ট হাতে পেতে চার-পাঁচদিনের অপেক্ষা। তবে কেমন আছেন মিমি ভুয়ো ক্যাম্প থেকে টিকা নিয়ে? উদ্বিগ্ন অনুরাগীরা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন।
এদিন ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিয়ো বার্তায় মিমি সকলকে আশ্বস্ত করে জানান, ‘আমি একদম সুস্থ আছি, আমাকে মেসেজ করেছেন আপনারা সকলে ধন্যবাদ’। ভুয়ো ক্যাম্পে প্রতারণার শিকার সকলের উদ্দেশে সাংসদ বলেন, ‘দেখুন,সবাই আমরা প্রতারিত, এখন আর আমাদের হাতে কিছু নেই। তবে আমার মনে হয় আমি যখন সুস্থ আছি, আপনারাও রয়েছেন শুধু প্যানিক করবেন না। আমার কথা হয়েছে আধিকারিকদের সঙ্গে , ওই টিকার স্যাম্পেল ইতিমধ্যেই পরীক্ষার জন্য চলে গিয়েছে। ওই টিকা গুলোয় কী ছিল আমরা রিপোর্ট এলে জানতে পারব সেটা , তবে ওর মধ্যে ক্ষতিকারক কোনও পদার্থ ছিল না যেটুকু আমি জেনেছি, তবে হ্যাঁ ওতে করোনা টিকা অবশ্যই ছিল না সে ব্যাপারে আমরা সকলেই মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু, আমাদের রিপোর্ট হাতে পাওয়া অবধি অপেক্ষা করতে হবে’, পুরোপুরি নিশ্চিত হতে।
দেবাঞ্জন দেব নামের ওই প্রতারক কসবা ছাড়াও আরও অনান্য জায়গাতেও করোনা টিকা ক্যাম্প আয়োজন করেছিলেন বলে দাবি করেন মিমি, সাংসদ জানান তাঁরা সকলেই যেন কেএমসির সঙ্গে কিংবা নিজ এলাকার কাউন্সিলর বা বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাঁরা দেবাঞ্জন দেবের ক্যাম্পে টিকা নিয়েছেন পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা বিস্তারিত জানতে।
মিমি এদিন জালিয়াতদের হাত থেকে বাঁচতে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে করোনা টিকা নিতে গেলে, তা জানান। করোনা টিকা নেওয়ার পরবর্তী সার্টিফিকেট কেমন হবে তা ভিডিয়োতে তুলে ধরেন মিমি, পাশাপাশি জানান টিকা নেওয়া হলেই সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্টার করা মোবাইল নম্বরে মেসেজ আসবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে। সেই মেসেজ কখনও কখনও আসতে দেরি হয় ঠিকই, তবে সকলেই বিশেষ নজর দেয় যেন সার্টিফিকেটের ব্যাপারে।
টিকা নেওয়ার পর মিমির মনে সন্দেহ দানা বেঁধেছিল সার্টিফিকেট হাতে না পাওয়ার জেরেই এবং এই গোটা চক্রের পর্দা ফাঁস করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি সেখান থেকেই বলে এই ভিডিয়োতে জানান অভিনেত্রী। এদিন অনুরাগীদের সচেতন করেন করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়েও তারকা সাংসদ।