সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁদে ফেলে ফ্ল্যাটে ডেকে আনা হতো। তারপর হঠাৎই নকল পুলিশের দল উপস্থিত হতো। এই ভাবেই রমরমিয়ে ব্যবসাটা চলছিল। সামনে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। হানিপ্রীত নামের এই গ্যাংয়ের এক সদস্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করত। এরপর তাকে তার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ডাকতেন। তার ফাঁদে কেউ ধরা পড়লেই ফ্ল্যাটে পৌঁছালে তার অন্য সহযোগীরা ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে অভিযানের ভান করতেন। এরপর চলতো ব্ল্যাকমেইলিং। দিল্লী পুলিশ ফাঁস করলো এদের জারিজুরি।
সুন্দরী মেয়েদের ব্যাবহার করে এই চক্রটি ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধনী ব্যক্তিদের প্রলোভিত করে ফাঁসিয়ে নিত। এরপর তাদের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে আসত, যেখানে এই চক্রের সদস্যরা পুলিশ পরিচয়ে অভিযান চালাত। এরপর শুরু হতো ব্ল্যাকমেইলিং খেলা। পুলিশ এই গ্যাংয়ের তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে, আর হানিপ্রীত নামে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে।
আটার ডিস্ট্রিক্ট দিল্লির স্পেশাল স্টাফ তিন অভিযুক্ত পবন ওরফে ঘনশ্যাম, মনজিৎ এবং দীপককে গ্রেপ্তার করেছে। আসলে, দিল্লির এক ব্যবসায়ী পশ্চিম বিহার থানায় মামলা করেছিলেন। অভিযোগকারীর অভিযোগ ছিল যে দিল্লিতে একটি দল তাকে হানিট্রাপে ফাঁসিয়ে এবং ব্ল্যাকমেল করে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগের পর পুলিশ এই চক্রটিকে খুঁজতে শুরু করে।
ডিসিপি আউটার ডিস্ট্রিক্টের তত্ত্বাবধানে এই চক্রটিকে ধরতে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল। পুলিশ ব্ল্যাকমেইলিং ফ্ল্যাটের ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে অভিযান চালালেও অভিযুক্তরা পলাতক হয়ে যায়। ফ্ল্যাটের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এরপর, যার ফলে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত পবনকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়। এর পরে, পুলিশ দিল্লির পশ্চিম বিহারের জ্বলা-হেদি মার্কেটের ফায়ার স্টেশনের কাছে থেকে তিন অভিযুক্তকে ধরে এবং গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানায়, তারা সবাই হরিয়ানার বাসিন্দা। এরা ফেসবুকে হানিপ্রীত নামে এক তরুণীর সংস্পর্শে আসেন। এরপর সবাই মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এরপর দিল্লির পশ্চিম বিহারে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আইডি তৈরি করেন হানিপ্রীত। তিনি ধনী লোকদের সাথে আড্ডা দিতেন। ঋতু বনসাল নাম নিয়ে এই আইডি তৈরি করেছিলেন তিনি। হানিপ্রীত ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে পুরুষদের সাথে কথা বলতো এবং তাকে তার ফ্ল্যাটে তার সাথে দেখা করতে রাজি করাতে।
এই ভাবেই এক ব্যক্তি একদিন তার ফ্ল্যাটে পৌঁছালে কিছুক্ষণ পর তার দলের সদস্যরা পুলিশ সেজে অভিযানে নামে। এতে, মনজিৎ একজন সাব-ইন্সপেক্টরের ইউনিফর্ম পরেছিলেন এবং বাকি দুজন তার অধস্তন ছিলেন। হানিপ্রীতকেও একইভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল যেন আসল পুলিশ অভিযান চালিয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এরপর হানিপ্রীত মামলা ধামাচাপা দিতে নকল পুলিশকে টাকা দেওয়ার অনুরোধ করেন। এবং ওই পুরুষ বন্ধুর কাছ থেকে টাকা চান। এই গোটা মামলার তদন্ত চলাকালীন মনজিৎ ওরফে মনদীপের নির্দেশে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়। পলাতক অভিযুক্ত হানিপ্রীতকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।