আজকের দিনে রাখি পূর্ণিমা। আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন ভাইবোনের সম্পর্ককে সুদৃড় করার। এই বছর রাখি পূর্ণিমা ২২ অগাস্ট পালিত হবে। এই প্রথার জন্ম ঠিক কবে থেকে জানেন? কেন পালিত হয় এই প্রথা, হিন্দু পুরাণ কি বলছে আসুন জেনে নিই
আরও একটি গল্প খুবই লোকমুখে ফেরে মহাভারতে রাখীবন্ধনের। কৃষ্ণের প্রতি শিশুপাল অসন্তুষ্ট হন এবং যুধিষ্ঠিরের দরবারে তাকে অপমান করেন। পাপের সমস্ত সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিলেন শিশুপাল এবং তাঁকে শাস্তি দেওয়ার জন্য শিশুপালের দিকে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সুদর্শন চক্র ছেড়ে দেন । চক্রটি তীব্র গতিতে শ্রীকৃষ্ণের হাতে যখন ফিরে আসে তখন তাঁর আঙুল কেটে যায়।দ্রৌপদী তাঁর কাপড়ের একটি অংশ ছিঁড়ে শৈশবকালের বন্ধুর ক্ষতস্থানে বেঁধে দেন কৃষ্ণকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখার পর । দ্রৌপদীর এই কাজই সারাজীবনের মতো শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ লাভ করিয়ে দেয় তাঁকে। আর তাই তো যখন দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষার্থে ও জনসমক্ষে দ্রৌপদীকে অপমান করার হাত থেকে পাণ্ডবরী বাঁচাতে পারেননি তখন কৃষ্ণই দ্রৌপদীকে রক্ষা করেন। দ্রৌপদীকে নিরাপত্তা দেন কৃষ্ণ শত্রুদের হাত থেকে।
রাখীবন্ধন উত্সবে একটি পৌরাণিক গল্পে কথিত আছে, দৈত্য রাজা বলি বিষ্ণুর পরম ভক্ত ছিলেন । বৈকুণ্ঠ ছেড়ে কৃষ্ণ বাস করতে শুরু করেন রাজপ্রাসাদে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে। কিন্তু মহালক্ষ্মীর মন তাতে ভালো নেই। কী করেন তিনি। ছদ্মবেশে হাজির হন বলির প্রাসাদে। বিষ্ণু-পত্নী রাজাকে বলেন তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ । তিনি অনুরোধ করেন যতদিন না, তাঁর স্বামী ফিরে আসেন যেন বলিরাজা ততদিন তাঁকে আশ্রয় দেন । শ্রাবণ পূর্ণিমায় লক্ষ্মী তাঁর হাতে রাখী বেঁধে দেন। আপ্লুত হয়ে যখন বলিরাজা জানতে চান, তাঁর কী প্রার্থনা,বিষ্ণুকে ফিরিয়ে দিতে। এরপর বিষ্ণু বলিরাজের প্রাসাদ থেকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যান।
রাখীবন্ধনের সঙ্গে একটি যোগ আছে মা সন্তোষীর উপাখ্যানের। কারও কারও বিশ্বাস, রাখী উত্সবের দিন গণেশের বোন একটি রাখী বেঁধে দেন তাঁর হাতে। এতে দুই ছেলের মন খারাপ হয় গণেশের। তাদের কোনও বোন ছিল না। তারাও তখন বোন পাওয়ার আশায় বায়না ধরে বাবার কাছে। গণেশ তখন তাঁর দুই ছেলের মন ভাল রাখার জন্য এক কন্যার জন্ম দেন হোমাগ্নি থেকে। এই দেবীই নাকি গণেশ-কন্যা সন্তোষী মা। সন্তোষীই গণেশের দুই পুত্রের হাতে বেঁধে দেন রাখী পরবর্তীতে।