ঢেঁড়শ বা ভেন্ডি বা ওকারা (Okra) একটি পুষ্টিতে ভরপুর গ্রীষ্মকালীন সবজি। ঢেঁড়শ পুরো ভারতের এবং বাঙালিদের মধ্যে জনপ্রিয় ও স্বাদে ভরপুর একটি সবজি। ঢেঁড়শ পোস্ত, ঢেঁড়শ ভাজা, সিদ্ধ বা ঢেঁড়শের তরকারি ইত্যাদি অনেক ঢেঁড়শের পদ পাতে পড়লে এক থালা ভাত খেয়ে নেওয়া কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু শুধু খেতে ভালো তাই নয় বহু স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিকারও করে দেবে এই ঢেঁড়শ (Okra)। এটি Malvaceae গোত্রের একটি সবজি (Abelmoschus eseulentus)। ঢেঁড়শের ভেতরে রয়েছে অনেক উপকারী উপাদান। ঢেঁড়শ নানা প্রয়োজনীয় উপদান আর ভিটামিন , খনিজে ঠাসা। প্রােটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, গন্ধক, সােডিয়াম, লােহা, তামা এবং ভিটামিন এ ও সি ইত্যাদি নানা ঔষধি গুণ। জেনে নিন কি কি শারীরিক সমস্যায় কাজ করে ঢেঁড়শ…
১) ঢেঁড়শ পুষ্টিকর এবং শরীরের পক্ষে ভাল। কচি আর নরম ঢেঁড়শ এর সবজি খেলে ত্বক ভালো হয়, উজ্জ্বল হয়। ত্বকে জেল্লা আসে।
২) রােজ সকালে যদি কয়েকটি করে টাটকা নরম ঢেঁড়শ খাওয়া যায় শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ভিটামিন আর এনার্জি পাওয়া যায়।
৩) ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢেঁড়শ খাওয়া ভীষণ দরকারী। এতে উপস্থিত ইউগেনল রক্তে শর্করা মিশে যাওয়াতে বাধা দেয়, ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪) ঢেঁড়শ রুচি বাড়ায়, বীর্যবর্ধক এবং পৌষ্টিক গুণে ভরা। তবে যারা কাশি এবং কফ ও বায়ুরােগে ভুগছেন তাদের জন্যে ঢেঁড়শ খাওয়া ভাল নয়।
৫) ঢেঁড়শ উচ্চ ফাইবার যুক্ত। এর মধ্যে রয়েছে সলিউবল ফাইবার পেকটিন। এই কারণে এটি রক্ত পরিষ্কার রাখে আর ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে। এতে করে কার্ডিওভাস্কুলার কোনো জটিলতা বা হৃদপিণ্ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
৬) ঢেঁড়শ দেহে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরী করতে সহায়তা করে। এই কারণে অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তস্বল্পতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাই অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে নিয়মিত ঢেঁড়শ খাওয়া উচিত।
৭) ঢেঁড়শ গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের মস্তিষ্ক তৈরিতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে। এমনকি গর্ভপাতও প্রতিরোধও করে। গর্ভধারণের নানা জটিলতা ও গর্ভকালীন সময়ে ফিটাসের নিউরাল টিউবের সমস্যা দূর করতে ঢেঁড়শ ভীষণ উপযোগী।
৮) মানসিক অবসাদ আর বিষণ্ণতা দূর করে ঢেঁড়স। ঢেঁড়শ খেলে মনের দুর্বলতা এবং অবসাদভাব দূর করতে সাহায্য করে।
৯) চোখের ভালো রাখতে পারে ঢেঁড়শ। এই সবজিতে আছে বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আর লিউটিন যা চোখের গ্লুকোমা, চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে।