চাকরি থেকে অবসর নেওয়া হয়েছে প্রায় বছর তিনেক। যদিও এখনও পেনশন পাননি হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হয়েছে সেই শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ বর্ধমানের মেমারির বাড়ি থেকে। ওই মৃত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম সুনীল কুমার দাস। তিনি শিক্ষারত্ন পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছিলেন ২০১৯ সালে । অনেকেই তার এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না। তার পরিবার দাবী করেছেন যে পেনশনের জন্য সরকারি দপ্তরের দরজায় দরজায় প্রায়ই যেতেন। তবুও পেনশন চালু হয়নি তার।
পরিবার আরও জানিয়েছে , অবসরের পরে সুনীল কুমার দাস নানাভাবে চেষ্টা করতেন পেনশন পাওয়ার। অনেকবার স্কুলেও গিয়েছিলেন তিনি। বৃদ্ধ শরীর নিয়ে বহুবার বিকাশ ভবনেরও চক্কর কেটেছেন তিনি। কিন্তু এরপরও পেনশন মেলেনি। প্রায়ই অবসাদে ভুগছিলেন তিনি কিভাবে নিজের পেনশন পাবেন তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। অবশেষে নিজেকেই সরিয়ে দিলেন দুনিয়া থেকে।
মৃত শিক্ষকের পরিবারের দাবি, বেশ কিছুদিন আগেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন । সদ্যই পিএইচডি সম্পূর্ণ করেছে তার একমাত্র ছেলে । তিনিও খুব তাড়াতাড়ি সমস্যা পত্র পেয়ে যাবেন । পেনশনের টাকা না পেয়েও সমস্ত দায়িত্ব তিনি সামলেছিলেন। কিন্তু এইভাবে দীর্ঘদিন চলার কারণে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। বছর তিন হল অবসর নিয়েছেন তবুও পেনশন চালু হয়নি বলে খুব অসুস্থ ছিলেন।
মৃতের দাদা শঙ্কর দাস জানিয়েছেন , বেশ কিছুদিন ধরেই মনমরা হয়েছিল ভাই । পেনশন না পাওয়ার জন্য মনে হচ্ছে ও এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। শিক্ষকতা করত ডেভিড হেয়ার স্কুলে। কি করে যে এমন করে ফেলল ! মৃতের জামাই প্রকাশ পাণ্ডা বলেছেন , এত জেনারেশনকে তিনি পড়িয়েছেন। পেনশন পেলেন না সেই মানুষটাই। তিনি পেনশন না পেয়েই অবসাদে ভুগছিলেন।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পকেটের টাকা না খসালে কিছুই হয়না এ রাজ্যে। তদন্ত করতে হবে এই ঘটনার। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন , কোনও সমস্যা ছিল কি না পেপার সংক্রান্ত সেটা জানা দরকার। এদিকে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে এই ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক শিক্ষাবিদ।