বিয়ের আগে কত কি দরকারী! বিয়ের জামা কাপড় কেনা, পার্লার যাওয়া, ফটোগ্রাফার খোঁজা, বিয়ের সাজ সজ্জা এক কথায় হুলুস্থুল। কিন্তু বিয়ের আগে সরকারী কোর্স করতে হয়, না হলে বিয়ে হবে না। কি শুনে অবাক হচ্ছেন? তবে এই দেশের জন্যে এটাই নিয়ম। নাহলে বিয়ে আপনার কপালে নেই। ইন্দোনেশিয়ায় বিয়ের আগে ‘প্রি ওয়েডিং কোর্স’ করা বাধ্যতামূলক করেছে সেই দেশের সরকার। শুধু বিয়ের জন্য পাত্র পাত্রী রাজি থাকলেই এখন থেকে আর সেই দেশে বিয়ে করা যাবে না। করতে হবে এই প্রি ওয়েডিং কোর্স। এই কোর্সটি তিন মাসের। এই কোর্সে পাশ করে সরকারি সার্টিফিকেট লাভ করলে তবেই বিয়ের করার আবেদন মঞ্জুর হবে। ২০২০ সাল থেকে এমনই নিময় চলে আসছে ইন্দোনেশিয়ায়।
কিন্তু সেই দেশের সরকার সূত্রে জানা গেছে যে, এই তিন মাসের ‘প্রি ওয়েডিং কোর্স’ করতে কোনো টাকা ব্যয় করতে হবে না হবু পাত্র পাত্রীকে। এই কোর্সের পুরো খরচটাই বহন করবে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। এক বারের চেষ্টায় এই প্রি ওয়েডিং পরীক্ষায় পাশ না করতে পারলেও চিন্তা নেই। হবু পাত্র বা পাত্রী পরীক্ষার্থী আরো বহু বার সুযোগ পাবেন পরীক্ষা দেওয়ার। যতক্ষণ না পরীক্ষায় পাশ নম্বর তুলতে পারছেন ততবার পরীক্ষা দিতে পারবেন হবু বর বউ।
কিন্তু যতবার ইচ্ছা পরীক্ষা দিলেও যতক্ষণ না পর্যন্ত পরীক্ষায় পাশ করছেন ততক্ষন অবধি মিলবে না কোনও বিয়ের পিড়িতে বসার অনুমতি। সরকারি শংসাপত্র হাতে পেলে তবেই বিয়ে করতে দেবে করার অনুমতি ইন্দোনেশিয়ার সরকার। সে দেশের ‘হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স কোঅর্ডিনেটিং’ দফতরের তরফ থেকেই বিয়ের আগে এই কোর্সের কথা জানানো হয়েছিল।
কিন্তু এই অদ্ভুত নিয়মের চালু করার কারণটা কি? জানা যাচ্ছে এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ইন্দোনেশিয়াতে সাম্প্রতিক সময়ে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা অনেকাংশেই বেড়ে গিয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের হার এত বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে সামনে এসেছে একে অপরের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ইচ্ছার অভাব, সন্তান কে বড় করার বিষয়ে দায়িত্বহীনতা, পরস্পরের সাথে লাগাতার অশান্তি ইত্যাদি বিষয়। তাই বিবাহ বিচ্ছেদের এই বেড়ে যাওয়া সংখ্যায় রাশ টানতে এই কোর্স চালু করে তা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। যাতে বিবাহিতরা সুখী দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করতে পারে ইন্দোনেশিয়ায় বেশিরভাগ দম্পতি।