পরিচিত বন্ধুর প্রোফাইল থেকে এসেছিল বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট। কিন্তু বন্ধুত্বের আবেদনে সাড়া দিতেই বিপাকে পড়লেন কিশোরী ছাত্রী। কিছু সময় যেতে না যেতেই বুঝতে পারলেন যাকে তিনি নিজের বন্ধু ভেবেছিলেন সে আদতে তার বন্ধু নয়, বরং বন্ধুর নাম নিয়ে ,তার ছবি চুরি করে সেগুলো ব্যবহার করে অন্য কেউ ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছে। এরপরে সেই অজ্ঞাতপরিচয় মানুষটি রেহাই দেয় না ওই কিশোরী ছাত্রীকেও। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীর ছবি এডিট করে ভুয়ো কুরুচিকর অশ্লীল ছবি বানায় সে। সেগুলি ব্যাবহার করে নিজের ভুয়ো পরিচয়ের আড়ালে ছাত্রীকে রীতিমত ব্ল্যাকমেল করতে থাকে সে। সেই দাবী মানতে রাজি না হওয়ায় তার এডিট করা কুরুচিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয় সে। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি থানা এলাকার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এডিট করা ছবি পোস্ট হলে লোকলজ্জার ভয়ে নিজের মধ্যেই গুটিয়ে যায় ছাত্রী। সামনেই ছিল উচ্চমাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ন পরীক্ষা। সেই পরীক্ষাতেও মন দিতে পারছিল না আতঙ্কে, ভয়ে। এমনকি চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার কোথাও মাথায় এসেছিল কয়েকবার। তবে অবশেষে সাহস করে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতেই অভিযুক্ত কে পাকড়াও করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে অভিযুক্ত নাবালক। তাই তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে পেশ করার পর আপাতত হোমে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই এই সাইবার হেনস্থার আতঙ্ক মন থেকে মুছতে পারছে না
ওই ছাত্রীর নিজের অভিযোগে জানিয়েছেন, বন্ধুর ছবি প্রোফাইল পিকচারে থাকায় ওই প্রোফাইল থেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেছিল সে। এরপরই মেসেঞ্জারে কথা বলতে গিয়ে বুঝতে পারে এটা বন্ধুর প্রোফাইল নয়। মেসেঞ্জারেই ওই অপরাধী কিশোর সেখানেই তাকে বেশ কয়েকটি ছবির স্ক্রিনশট পাঠায়। শারীরিক সম্পর্কে স্থাপন করার দাবি করে কিশোরীর কাছে, না হলে এডিট অশালীন ছবি ভাইরাল দেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্ত। কিশোরী রাজি না হলে সেই সব ছবি স্টেটাসে দিতে থাকে। এই বিষয়টি জানার পরই মানসিক চিন্তা, উদ্বেগ ঘিরে ধরে ছাত্রীকে। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে ছাত্রীর পরিবারও। এরপরই রায়দিঘি থানা ও সুন্দরবন সাইবার ক্রাইম থানার উদ্যোগে ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত। ছাত্রীর পরিবার জানাচ্ছে এই ঘটনা ঘিরে পাড়ার লোক, প্রতিবেশীদের মধ্যে গুঞ্জন। বাইরে বেরোতে ও অস্বস্তিতে তারা। কোনো কিছুর মধ্যে জড়িত না থেকেও অসহ্য মানসিক চাপে দিন কাটলো তাদের।