উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে এক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে এক বিবাহিত প্রেমিকা খুন করেছে নিজের প্রেমিককে। অভিযুক্ত প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরাও এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত। ঘটনাটি সুরাজপুর থানা এলাকার পালি গ্রামের। এ ঘটনায় দুই মহিলা সমেত ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১লা মার্চ। সুরাজপুর থানা এলাকার পলি গ্রামের বাসিন্দা রবিনকে খুন করার পর তার লাশ একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত বান্ধবী মনিকা ও তার মা অঞ্জু কিছু কাজের অজুহাতে রবিনকে প্রথমে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর সেখানে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরে অভিযুক্ত বান্ধবীর ভাইরা নিহত রবিনের মৃতদেহ একটি খালে ফেলে দেয়।
নিহত রবিনের পরিবার এবং স্বজনরা জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে রবিন বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপরে আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে তার পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাননি। সময় পেরোতে থাকলে তাদের দুশ্চিন্তা আরো বাড়তে থাকে। এরপরেই তাদের মনে হয় যদি রবিনের আগে প্রেমিকা ছিল মণিকা। যদিও কিছুদিন আগে মনিকার বিয়ে হয়েছে তাও সে হয়ত জানে যে সে কোথায় গিয়েছে! এরপরই রবিনের বান্ধবী মনিকার বাড়িতে ফোন করা হয়। কিন্তু ফোন পেয়ে কোনো তথ্য দেওয়ার জায়গায়, বা চিন্তা প্রকাশ করার জায়গায় মনিকার পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করলে রবিনের পরিবারের কিছু একটা সন্দেহ হয়। এরপর রবিনের মামা থানায় গিয়ে রবিনের নিখোঁজ থাকার অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ মামলার তদন্ত শুরু করলে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। অভিযুক্তরা জানায়, মনিকা ও রবিনের মধ্যে প্রেম ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে মনিকা অন্য কোথাও বিয়ে করেন। তা সত্ত্বেও দুজনেই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত এবং দেখাও করত। গত সপ্তাহে মনিকা তার মামার বাড়িতে এলে সে আবার রবিনের সাথে দেখা করে। মনিকার পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে রবিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী মনিকা ও অঞ্জু ফোন করে রবিনকে বাড়িতে ডেকে আনে। এ সময় বাড়িতে মনিকার তিন ভাই রবি, সাগর ও সুবোধও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা রবিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর তারা তাদের এক বন্ধু মনীশকে ডাকে মৃতদেহ সরানোর জন্য এবং তার গাড়িতে করে লাশটি একটি খালে ফেলে দিয়ে আসে।
ডিসিপি সেন্ট্রাল হরিশ চন্দর জানান, তিনি যখন মনিকার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন, তখন দেখেন একেকজন একেক রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে পুলিশ তাদের সন্দেহ করে এবং কড়া জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অভিযুক্তরা তাদের অপরাধ স্বীকার করে। বর্তমানে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।