কেন তাকে দেখানো হলো পৃথিবীর আলো? কেনইবা তার মাকে গর্ভবতী অবস্থায় প্রসব করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল? এমন অভিযোগ তুলে মায়ের গর্ভকালীন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হলেন এক তরুণী! আর এই মামলার কারণে ক্ষতিপূরণও পেলেন কোটি টাকার। এমন অদ্ভুত মামলার কথা সাধারণত শোনা যায় না। হয়তো আগে কখনোই কেউ শোনেনি তাই এই মামলা ঘিরে চতুর্দিকে চলছে আলোচনা।
মামলা দায়েরকারী এই তরুণীর নাম এভি টোম্বিস। কুড়ি বছর বয়সী এই ব্রিটিশ তরুণী তাঁর মায়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন বিরল মামলা করেছেন। কিন্তু কি কারনে?
দ্য সান-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্ম হয়েছে এই তরুনীর যা তার গর্ভে থাকার সময় তার মাকে জানানো হয়নি বা সচেতন করা হয়নি বলা যায়। স্পাইনা বিডিফা নামের এক রোগ নিয়ে জন্মেছেন এই তরুণী। এটি একটি মেরুদন্ডের জটিল সমস্যা। এই সমস্যার জন্য বেশিরভাগ সময়টাই টিউব নিয়ে চলতে হয় এভিকে। আর নিজের এই জন্মলগ্ন থেকে থাকা শারীরিক সমস্যার জন্যই মায়ের চিকিৎসক ফিলিপ মিচেলকে আদালতে অবধি নিয়ে যান এভি।
এভির অভিযোগ, প্রেগন্যান্ট থাকাকালীন তাঁর মাকে ঠিকভাবে সতর্ক করেন নি ওই চিকিৎসক। যদি ওই চিকিৎসক সঠিকভাবে তার মাকে জানাতেন যে গর্ভস্থ সন্তান স্পাইনা বিফিডা-য় আক্রান্ত হতে পারে, আর সেই কারণে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার এবং নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়া দরকার, তা হলে হয়তো তাঁর এমন ভাবে জন্ম নিতে হত না। বা তাঁকে জন্ম দেওয়ার বিষয়েও ভেবে দেখতেন তাঁর মা।
এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক মামলা বলে উল্লেখ করেছে লন্ডন হাই কোর্ট। বিচারপতির রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, যদি সঠিক সময়ে এভি-র মাকে এই সমস্যার বিষয়ে অবহিত করা হত, তা হলে তিনি সন্তানধারণের বিষয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। শুধু তাই নয়, হয়ত সুস্থ সন্তানেরও জন্ম দিতে পারতেন। প্রসঙ্গত এভি-র মা-ও একই অভিযোগ এনেছেন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আদালত তাই এভি-র যুক্তিকে সমর্থন করে অবশেষে চিকিৎসককে মত অঙ্কের জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে।