ফেসবুকে মহিলাদের অ্যাকাউন্ট থেকে আসত বন্ধুত্বের হাতছানি। সেই অ্যাকাউন্টগুলি চালাতো রেড লাইট এলাকার মহিলারা। বন্ধুত্ব করলেই প্রস্তাব আসত যৌনতা মূলক চ্যাটের। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে একবার ভিডিও কলে সেক্স চ্যাট করতে আসলেই ফাঁসিয়ে দেওয়া হতো। কারো অগোচরেই তার অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে নেওয়া হতো। তারপরই শুরু হতো ব্ল্যাকমেল। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে রাজস্থানের ভরতপুর জেলা থেকে। জানা গেছে এই চক্র রাজস্থান থেকে মুম্বাই পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
এই ঘটনায় রাজস্থানের ভরতপুর জেলার কাইথওয়ারা থানার পুলিশ চার রাজ্যের ওয়ান্টেড আসামি কাইথওয়ারার বাসিন্দা, ঠগ রাহুল মেওকে গ্রেপ্তার করেছে। রাহুল ঠগ গ্যাং তৈরী করে দেশের বিভি ন্নপ্রান্তের রাজ্যের মানুষকে প্রতারণা করে আসছিল। এর দলে রেড লাইট এলাকার মহিলারাও রয়েছে। এই চক্রের সাথে জড়িতরা মেয়েদের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি তৈরি করে মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করত এবং পরে যৌন চ্যাট (Sex Chat) করে অশ্লীল ভিডিও ক্লিপ তৈরি করত। এরপর অশ্লীল ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করত।
অভিযুক্তদের মোবাইল পরীক্ষা করে অনেক ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আইডির খোঁজ, সেক্স চ্যাট, অনলাইনে টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত প্রতারণার মাধ্যমে টাকা লুট করার একাধিক ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। এই ঠগরা রেড লাইট এলাকার মেয়েদেরও তাদের দলে রাখত, যাদের তারা ব্যবহার করত মানুষের সাথে সেক্স চ্যাট করে তারপর অশ্লীল ভিডিও তৈরি করার কাজে। কাইথওয়ারা থানার ইনচার্জ রাম নরেশ মীনা জানিয়েছেন, তিনি খবর পেয়েছিলেন যে তার থানা এলাকার কোনও জায়গায় বসে এক ব্যক্তি যৌন নির্যাতনের ফাঁদে পেতেছে। পরে পুলিশ অভিযান চালালে অভিযুক্ত পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। কিন্তু ধাওয়া করে তাঁকে আটক করা হয়।
ইনচার্জ রাম নরেশ মীনা বলেন, ‘গ্রেপ্তার করা ঠগকে যখন তল্লাশি করা হয়, তখন তার কাছে একটি ফোন পাওয়া যায়, যাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট পাওয়া যায়। ঠগীদের মোবাইলে মানুষের অশ্লীল ভিডিও, সেক্স চ্যাট, মানুষকে হুমকির বার্তা, অনলাইনে টাকা লেনদেনের নানা তথ্যও পাওয়া গেছে। এই প্রতারক গ্যাংটি হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং দমনদীপের মানুষকে যৌন চ্যাট করে , এবং অশ্লীল ভিডিও বানানোর মাধ্যমে প্রতারিত করেছে। অভিযুক্তদের খুঁজছিল রাজ্যের পুলিশ। যেমন মেওয়াত এলাকার ঠগরা সেক্স চ্যাটের মাধ্যমে মানুষকে ঠকাচ্ছে। এর পাশাপাশি এখানকার গুণ্ডারা OLX-এর মাধ্যমে গাড়ি বিক্রির অজুহাতে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। যদিও পুলিশ এইসব ঠগদের এড়াতে মানুষকে সচেতন করে চলেছে, তবুও তারা অন্য রাজ্যের লোকদের ফাঁদে ফেলে অপরাধ করে।