মেয়ের শারীরিক অসুস্থতা। এই নিয়ে অবসাদে থাকতেন মেয়েটির বাবা। কিন্তু একদিন যে এই কারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন সেটা বোধহয় কেউ ভাবেননি। এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার খবর সামনে এলো দিল্লী থেকে। দিল্লীর নরেলা শিল্প অঞ্চলের মেট্রো বিহার এলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে ১০ বছরের বাচ্চা মেয়ের মৃত্যুর পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক বাবা। নিহতের কাছ থেকে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মেয়েকে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নিহত ব্যক্তি। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, মেয়েটির শরীরে কোনো আঘাত বা শ্বাসরোধের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশ অবশ্য মেয়েটির স্বাভাবিক মৃত্যুর সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মেয়েটির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
মৃতের নাম সুরেশ (৩২) এবং মেয়ের নাম মানসী। মেট্রো বিহারের একটি বাড়ির চতুর্থ তলায় থাকত সুরেশ পরিবার। তিনি স্ত্রী রমা দেবী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে মানসী কে নিয়ে থাকতেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪.৪৫ মিনিটে সুরেশের আত্মহত্যার খবর পায় পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, সুরেশ ফ্যানের রডের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ভারের কারণে তার শরীর বিছানায় নুয়ে পড়েছে। সেখানে তার মেয়ে বিছানায় শুয়ে ছিল, যার উপর একটি কম্বল চাপা দেওয়া ছিল। ঘটনাস্থলে সুরেশের ভাইজি রোহানকে দেখতে পায় পুলিশ। সে জানায় তার ঠাকুমা কাকা কে খেতে ডাকতে যায়। কিন্তু কাকাকে ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তিনি দৌড়ে উপরের তলায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানান।
প্রায় আধাঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে বিছানায় পড়ে থাকা মানসীর শরীরে কোনো নড়াচড়া না দেখে পুলিশ সদস্যরা তাকে উঠানোর চেষ্টা করলে তাকেও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃতদেহ দেখে বোঝা যায়, সুরেশের মৃত্যুর আগেই তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশ ক্রাইম ও ফরেনসিক দলকে ঘটনাস্থলে ডেকেছে। তদন্তের পর পুলিশ অফিসার জানান, মানসীর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন বা গলায় চাপের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মানসী অসুস্থ ছিল। যার কারণে সুরেশ মানসিক অবসাদগ্রস্ত থাকতেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মানসীর মুখে কিছু দিয়ে সুরেশ হয়ত তাকে হত্যা করেছে অথবা মানসীর স্বাভাবিক মৃত্যুর পর সে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশ মানসীর ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে।