নিখোঁজ যুবক, যাকে ফিরে পাওয়ার আশা পরিবারের সদস্যরা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন, ১৭ বছর পর যখন তাঁকে খুজেঁ পাওয়া গেল , তখন পরিবারের আনন্দের সীমা ছিল না। এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে গড়িয়াবন্দ জেলায়, যেখানে রায়গড়ের বাসিন্দা এক যুবক প্রায় ১৭ বছর পর তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছে। বিষয়টি দেবভোগ থানার অধীনে ঘটে। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় স্টেশন ইনচার্জ বসন্ত বাঘেলের তৎপরতার কারণে এই বিষয়টি সম্ভব হয়েছে। সোমবার, যুবকের পরিবারের সদস্যরা দেবভোগ থানায় পৌঁছে তাদের হারিয়ে যাওয়া ছেলেটির সাথে দেখা করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তারা একে অপরকে আলিঙ্গন করে, মিষ্টি খাওয়ায় এবং পরিবার দেবভোগ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
যুবকের নাম বিরজু ওরফে দাউ সনি। ৪৭ বছর বয়সী দাউর জানিয়েছে, তিনি ২০০৫ সালে প্রচুর টাকা উপার্জনের স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন। রাজধানী রায়পুরে কিছুদিন থাকার পর তিনি ছবি আঁকার কাজ শিখেছিলেন এবং তারপর থেকে তিনি দেবভোগে ভাড়া বাড়ি নিয়ে ছবি আঁকার কাজ করছেন। এই ভাবেই কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। ভাড়া থাকছিলো সে। একদিন দেবভোগ পুলিশ তাকে ডেকে তার স্থায়ী ঠিকানা জিজ্ঞেস করে। এরপরেই দেবভোগ পুলিশ তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে এবং তার পরিবার এবং বন্ধুরা তাকে ১৭ বছর পর নিতে আসে।
দাউ জানান, তার বাড়ির অবস্থা ভালো নয়। পরিশ্রম করে কোনোরকমে তার ঘর চলছিল। এমএ পাস করেও কিছু করতে পারেননি। গ্রামের লোকজনও বিদ্রুপ করছিল। তাই একদিন সে বাড়ি থেকে টাকা উপার্জনের স্বপ্ন নিয়ে বের হয়ে আসে। দাউ জানালেন, তিনি বড় মানুষ হয়ে তারপর বাড়ি যেতে চাইতেন। যাতে গ্রামে সম্মান থাকে এবং তার পরিবারের সদস্যরা ভালো জীবনযাপন করতে পারে, কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ হতে পারেনি। কিন্তু আজ যখন তার ভাই ও বন্ধুরা দুজনেই তাকে নিতে দেবভোগে পৌঁছায়, তখন পরিবেশ বদলে যায়।
দেবভোগ পুলিশ তাদের মিলিয়ে দেয়। মেজো ভাই উদয় সোনি নিশ্চিত ছিলেন না যে তার ভাই এত বছর পর তার সাথে আর কখনও দেখা করবেন। যাইহোক, তার বাল্যকালের বন্ধু রাধা কিশান জাংদে নিশ্চিত ছিল যে তার বন্ধু ভুল পদক্ষেপ নিতে পারবে না এবং একদিন সে অবশ্যই গ্রামে ফিরে আসবে। দেবভোগ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি বড় ভাই অজিত সোনি। তিনি বলেন, দেবভোগ পুলিশের কারণেই আজ তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসন্ত বাঘেল জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আওতায় এলাকার ভাড়াটিয়াদের যাচাই-বাছাই করা হলে দাউ-এর বিষয়টি সামনে আসে। প্রথমে দাউ সত্য না বললেও কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব খুলে বলেন। এরপর কসির থানায় যোগাযোগ করার পর দাউয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়। আজ তার পরিবারের সদস্যরা তাকে নিতে দেবভোগে পৌঁছেছেন।