আবারো রহস্যমৃত্যুর কলকাতার উপকন্ঠে। বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হলো মা ও ছেলের পচাগলা মৃতদেহ। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো দমদমের নবপল্লিতে। মৃত মহিলা শ্রাবণী পাল ও তার ছেলে সন্দীপ পাল। সাড়াশব্দ না পেয়ে বাড়ির দরজা ভাঙতেই নাকে আসে প্রবল দুর্গন্ধ। এরপর বাড়ির মালিক ভিতরে যেতেই চোখে পড়ে পচাগলা অবস্থায় রয়েছে দুটি মৃতদেহ। খবর পাঠানো হয় পুলিসকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দমদম থানার পুলিস মহিলা ও তার ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
সূত্র অনুযায়ী মৃত মহিলা ও তার যুবক ছেলে হাওড়ার আন্দুলের 0বাসিন্দা। মাস ছয়েক আগে দমদমের নবপল্লিতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন তারা। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন ইদানিং বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের বাড়ির দরজা টানা বন্ধই ছিল। ভাড়াটে হিসাবে এসে প্রথম তিন মাসের বাড়ি ভাড়া দিকেই পরের তিন মাস ভাড়ার টাকা বাকি পরে গিয়েছিল। বাড়িওয়ালাকে তাঁরা জানিয়েছিলেন যে বেশ কিছুদিন বাড়িতে থাকবেন না তারা।যদিও তারা কারো সাথে খুব বেশি মেলামেশা করতেন না তাও গত কয়েকদিন একেবারেই বন্ধ ছিল দরজা। একবারের জন্য খুলতে দেখা যায়নি। কিছু একটা গন্ডগোলের আভাস পেয়েছিল প্রতিবেশীরা। পরে বন্ধ ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে আরো সন্দেহ হয় তাদের। বৃহস্পতিবার সকালে মহিলার ভাই বাড়িতে দিদির খবর নিতে এলে রহস্য ফাঁস হয়। বাড়ির দোতলার ঘরে উদ্ধার হয় মা-ছেলের প্রাণহীন দেহ। ততক্ষনে দেহে পচন ধরেছে। তাদের মৃতদেহের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও।
মৃত শ্রাবণী পালের ভাই জানান বুধবার রাত থেকে অনেক বার নিজের বোন ও ভাগ্নেকে ফোন করেছিলেন সন্দীপের মামা। কিন্তু ফোন বেজে গেলেও কেউ ধরেননি। এরপরেই বিপদের আঁচ করেন তিনি।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, প্রচুর ধার দেনার চাপে পড়েছিলেন মা ও ছেলে। তাই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। মৃতদেহের পচন দেখে পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, প্রায় সাত দিন আগেই মারা গিয়েছেন দুই জন। সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ছেলে সন্দীপ পাল। মা শ্রাবণী পাল মৃত্যু কিভাবে মারা গিয়েছে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন সন্দীপ, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। আশেপাশের বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছেন তারা।