Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

KKR ক্যাম্পে বল হাতে আউট করেছেন বহু ব্যাটসম্যানকে! করোনাকালে দিনমজুরের কাজ করছেন এই কিশোর

পুরো নাম জিন্না মন্ডল। বয়স ১৯ বছর। বাড়ি বসিরহাটের বিবিপুরে। এই প্রত্যন্ত গ্রামে ক্রিকেট খেলা বলা যায় এক স্বপ্নের মতন। ক্রিকেট খেলাটাও যেন লাগে রূপকথা! বাড়িতে অভাব প্রকট। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এমন অবস্থা। তাই একরকম বাধ্য হয়েই অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল। তবে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নকে ছাড়েনি বসিরহাট (Basirhat) উত্তর বিধানসভার বিবিপুরের বাসিন্দা জিন্না মণ্ডল।

জিন্নার ক্রিকেটের যাত্রার শুরু হয় গ্রামের রাস্তায় পড়ে থাকা ছোট মুচি ডাব আর লেবু হাতে। পরে আস্তে আস্তে গ্রামের মাঠে জিন্না টেনিস বলে হাত পাকায়। ক্রিকেট খেললে রোজগার ভালো হয়। তাই কোনো ভাবে যদি ক্রিকেটার হওয়া যায় তাহলে সংসারে অভাব অনটন আর কিছুই থাকবে না এমনই চিন্তা ভাবনা থেকে খেলার শুরু করে এই জোরে বোলার। কিন্তু এরকম অজ গ্রামে না আছে ভালো ক্রিকেট কোচ না ক্রিকেট কোচিং করায় এমন কোনো ক্লাব। টেনিস বলে ভাল বল করেই সেই অঞ্চলের এক ক্রিকেটপ্রেমীর নজরে পড়ে জিন্না। এরপর সেই ব্যাবস্থা করে দেয় সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অ্যাকাডেমিতে এক ট্রায়াল দেওয়ার। তার বল করার ক্ষমতা দেখে বিনা পয়সায় ক্রিকেট খেলা শেখাতে রাজি হন কোচেরা। বাড়ি থেকে কলকাতার দূরত্ব অনেক। তাও কোনো কিছু দমাতে পারেনি তার ক্রিকেট অনুশীলন!

বছর উনিশের পেসার জিন্না মন্ডল নিজের প্রতিভায় পৌঁছে গেছে কেকেআর শিবিরেও। গত দুটি ধরে আইপিএলের সময় ইডেনে নানা টিমের ব্যাটসম্যানদের নেট বোলার হিসেবে কাজ করেছেন। কখনও মইন আলি বা কখনও শুভমান গিলদের নেটে বল করে মুগ্ধ করে দিয়েছেন। বোল্ড আউট করেছেন ডেভিড মিলারের মতন ক্রিকেটারদেরও। তাকে প্রশংসা করেছেন কেকেআর কোচ জাক কালিসও। সহকারী কোচ সাইমন কাটিচ নেটে বল করার সময় দেখিয়ে দিয়েছেন হাতের কব্জির মোড় ঠিক কী ভাবে রাখতে হয়। ক্রিকেটের হরেক টিপস দিয়েছেন কেকেআরের এর ক্রিকেটাররা। কলকাতা, পঞ্জাব ছাড়াও হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও নেটে বল করে নজর কেড়েছেন

কিন্তু করোনা আসতেই অবস্থা পাল্টে গেছে। লকডাউনের চক্করে বেঁচে থাকাই দায়। তাই এবার প্রশাসনের সহায়তা চাইছে প্রতিভাবান কেকেআরের নেটবোলার হিসেবে পরিচিত মুখ জিন্না। করোনা কলে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন তো দূরের কথা, এখন কোনও রকমে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাই এক বিশাল ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে জিন্নার কাছে।

এক ঝলক দেখলে মনে হবে সে বাঁহাতি। কিন্তু সে বল করার আগে সে ডান হাতে বল নিয়ে ডেলিভারি দেয়। আপাতত সে কালীঘাট ক্লাবে প্র্যাক্টিস করছে। কালীঘাট ক্লাবেরই কোচ সৌরভ সরকার। প্র্যাক্টিস করলে কোচ সৌরভ কিছুটা ভালো খাবার দাবার পান। এখন তো করোনা প্রাকটিস বন্ধ তাই লকডাউনে জিন্না বসিরহাটের বাড়িতেই আছে। আইপিএলও এবারে বিদেশে। জনমজুর বাবা, দর্জি দাদার কাজ নেই। তাই বাড়িতে রেশনের চাল-গম ছাড়া তেমন কোনও সুষম খাবারও নেই। দিন মজুরের কাজ করেই চলছে কোনো ক্রমে। কবে এই দুর্দিন কাটবে। অপেক্ষায় জিন্না।

Related posts

অন্যকে সঙ্গ দিয়েই মাসে বিপুল টাকা আয়! এই যুবকের অদ্ভুত পেশার বিষয়ে জানেন!

News Desk

শ্বশুরের বানানো শরবত খেয়ে অজ্ঞান বৌমা, জ্ঞান ফিরতেই টের পেলেন কি ঘটে গেছে তার সাথে!

News Desk

১৮ নভেম্বর: বাঘ ভারতের জাতীয় পশু ঘোষণা এবং আরো কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা যা আজকে ঘটেছিল

News Desk