আপনি হয়তো লক্ষ্য করে দেখবেন, আপনি রান্না করার সময় কিন্তু সর্বদা রান্নার পাত্র থেকে ধোঁয়া নির্গত হয় না। বরং বেশ কিছুক্ষন রাখার পরই ধোঁয়া নির্গত হতে থাকে। আমাদের একটা ধারণা আছে যে যতক্ষণ অবধি রান্নার পাত্রে রাখা তেল থেকে ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে না ততক্ষন পর্যন্ত মাছ বা মাংস দেওয়াটা উচিত না৷ সেটা না হলে নাকি কাঁচা তেলের গন্ধ থেকে যায়৷
সম্পূর্ণরূপে এটি একটি ভুল বা ভ্রান্ত ধারণা! নির্দিষ্ট স্মোক পয়েন্ট থাকে প্রতিটি তেলের। অর্থাৎ, তেল (Cooking Oil) ভেঙে যে তাপমাত্রায় গিয়ে ধোঁয়া ওঠে৷ উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড এই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যায়৷ এ ছাড়া ভিটামিন ভাঙে৷ ক্ষতিকর উপাদান শুরু হয় ফ্রি–র্যাডিক্যাল্স নামের৷ যার নির্ভুল হাত আছে হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অ্যালজাইমার, ক্যানসার-সহ জটিল রোগের মূলে৷ টাইমস নাউ ডিজিটালের সঙ্গে এই স্মোকিং পয়েন্ট সম্পর্কে একটি সাক্ষাত্কারে, ফোর্টিস হাসপাতালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান রিঙ্কি কুমারী জানিয়েছেন, একটি অ-মেরু রাসায়নিক উপাদান হল তেল। এটি হাইড্রোফোবিক এবং লিপোফিলিক এবং যা হাইড্রোকার্বন দ্বারা গঠিত। অর্থাৎ জলে তেল মিশে যায় না।
এই সমস্ত তেল অসম্পৃক্ত লিপিড আকারে বা তরল আকারে থাকে ঘরের তাপমাত্রায়। কিন্তু এরা উত্তপ্ত হয় যত তাড়াতাড়ি, খারাপ হতে শুরু করে সময়ের সঙ্গে। এর কারণ পুষ্টি এবং ফাইটোকেমিক্যাল সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হতে শুরু করে সময়ের সঙ্গে। অন্যদিকে, এটি ফ্রি র্যাডিকেল নির্গত করতে শুরু করে, তেল খুব গরম হয়ে গেলে যা থেকে বিষাক্ত গ্যাসের জন্ম নেয়।
প্রথমে হাইড্রোপেরক্সাইড তৈরি হয় এবং তারপরে এটি অ্যালডিহাইডকে পরিণত করে বিশেষজ্ঞদের মতে তেলের অবনতি হলে। একটি বিষাক্ত রাসায়নিক হল অ্যালডিহাইড যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের চিহ্নিতকারী হিসাবে দেখানো হয়েছে কোষে। এছাড়াও ডিজেনারেটিভ ডিজঅর্ডারের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এটি । অর্থাৎ বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায় গরুক তেলে রান্না শুরু করলে ৷ কারণ ফ্রি–র্যাডিক্যাল্স ধোঁয়ার সঙ্গে শরীরে যায়৷ হৃদরোগ থেকে ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়৷ সমস্যা বাড়ে হাঁপানি রোগীরও৷ তাই তেলে ধোঁয়া ওঠার আগেই, ঢাকা দিয়ে দিন, ফোড়ন–সবজি–মাছ, যা দেওয়ার দিয়ে৷ শরীর বাঁচবে ক্ষতিকর ধোঁয়ার হাত থেকে৷ অটুট থাকবে পুষ্টি ভাঁড়ারও৷ খাবারের ভিটামিন ও প্রোটিনের পরিমাণ কমে ছাঁকা তেলে ভাজলে৷ ক্যালোরি, ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট, ওজন, অপুষ্টি বাড়ে৷ পাল্লা দিয়ে হাইপ্রেশার–কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিজ, হৃদরোগ, স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে৷