Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

বিরল রোগে মৃত্যুপথযাত্রী ২ বছরের শিশু, বাড়িতেই ল্যাবরেটরি গড়ে ওষুধ তৈরি করলেন বাবা

এই জগতে টাকা পয়সা, প্রতিপত্তি, সম্পত্তি এসব কিছুর উর্দ্ধে কিন্তু স্নেহ ভালোবাসা, যদিও অনেকেই এই কথা মানতে চান না! সবার মতামত ভিন্ন ভিন্ন কিন্তু একটু ভেবে দেখলেই বোঝা যায় এই বিশ্বে সর্বাধিক যদি কিছু থেকে থাকে তা হল নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। চীনের এক বাসিন্দা সেটাই প্রমান করলেন। এক বিরল অসুখে সেই ব্যক্তির সন্তানের কপার অর্থাৎ শরীরে তামার অভাব ঘটায় তিনি নিজেই নিজের বাড়িতে এক ল্যাবরেটরি তৈরি করে ফেললেন আনাড়ি হাতে সন্তানের জন্য প্রযোজ্য ওষুধ তৈরী করে ফেললেন। বাবার তৈরী ওষুধ খেয়েই একেবারে সুস্থ বছর দুয়েকের হাওয়াং।

তার চিকিৎসকের মতে, প্রায় একমাসের বেশি বাঁচবে না হাওয়াং, যদি তাকে তার প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা না করতে পারে। পিতা জু ওয়েই তারপর আর সময় নস্ট করেননি। তন্ন তন্ন করে খুঁজেছেন চিনের (China) ওষুধের বাজার। কিন্তু ওষুধ মেলেনি মেনকেস সিন্ড্রোমের (Menkes Syndrome)। জু ঘটনায় অসহায় বোধ করেন। দিনের পর দিন আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছিলো সন্তান! করোনার কারণে সম্ভব হচ্ছিল না বিদেশে গিয়ে ছেলের চিকিৎসা করাও। কারণ এখনও কঠিন বিধিনিষেধ রয়েছে সে দেশে বিদেশে যাতায়াতের ক্ষেত্রে । বাড়িতে ল্যাবরেটরি তৈরি করে নিজে হাতে সন্তানের ওষুধ তৈরির সিদ্ধান্ত নেন অন্য উপায় না দেখে। তিনি পেশায় ছোট অনলাইন ব্যবসায়ী যোগ্যতা শুধুমাত্র স্কুলপাশ।

উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Colombia University) অধ্যাপক জন মেনকেস (John Menkes) এবং তার সহকর্মীরা ১৯৬২ সালে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করেন পুরুষ শিশুদের একটি বিরল রোগ সম্পর্কে। এখন মেনকেস সিন্ড্রোম নামে পরিচিত সেই বিরল রোগই। অদ্ভুত চুলের রোগ মেনকেস। শরীরে তামার অভাবে এই রোগ হয়ে থাকে। সহজলভ্য নয় জিনগত এই রোগের ওষুধ। ফলে জু তার ছেলের জন্য বাড়িতে ল্যাবরেটরি তৈরি করে ওষুধ তৈরি করতে বাধ্য হন।   

বছর তিরিশের জু ওয়েই চিনের কানমিং শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন। সেখানেই তিনি ল্যাবরেটরিটি তৈরি করেন। অনলাইনে মেনকেস সিন্ড্রোম নিয়ে পড়াশোনা করে ওষুধ তৈরি করেন তিনি। ভাষা সমস্যা হচ্ছিল শুরুতে। যেহেতু ইংরেজি ভাষায় লেখা মেডিসিনের অধিকাংশ জার্নালই। এদিকে জু-র অন্য ভাষা জানা নেই চিনা ছাড়া। শেষ পর্যন্ত হাওয়াংয়ের পিতা অনুবাদের সাহায্য নেন। কাজ সম্পূর্ণ করেও ফেলেন তিনি।

জুই ওয়েই-এর কথায়, “আদৌ এ ওষুধ তৈরী করতে পারবো কি পারবো না , আমার কাছে সেটা ভাবার মতো সময়ও ছিল না। আমাকে এটা করতেও পারবো।” জু ওয়েই বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সবাই ছিল সে পরিবার হোক বা বন্ধুরা। সবাই বলেছিলো এটা একেবারেই অসম্ভব।”

কিন্তু জু ছেলেকে ওষুধ তৈরি করেই খাওয়াননি। তিনি পরিচয় দেন পেশাদার মানসিকতার। একটি খরগোশের উপরে প্রথমে প্রয়োগ করে দেখেন। সন্তানকে তারপরই খাওয়ান। কম ডোজ দিতেন শুরুতে, পরে ডোজের পরিমান বাড়িয়েছেন একটু একটু করে। বাবার হাতে তৈরি ওষুধ খেয়ে সেরে না উঠলেও আগের থেকে অনেকেটাই ভাল আছে আদরের হাওয়াং।

Related posts

জন্ম থেকেই মাথা জুড়ে ছিল দুই ভাইয়ের, ডাক্তাররা আলাদা করতে গিয়ে যা হলো…

News Desk

চোখে পেরেক পোঁতা, গালে সিগারেটের ছ্যাঁকা! বালকের দেহ দেখে শিহরিত সকলে

News Desk

৭০ বছর বয়সে উপভোগ করা যায় ‘সেরা’ যৌনতা! নারী না পুরুষ কে বেশি উপভোগ করে

News Desk